
গুরুতর অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ সভায়।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন ধর্ম উপদেষ্টা আফম খালিদ হোসেন।
সভায় বৈদেশিক অনুদান (স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম) রেগুলেশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫–এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্তভাবে অনুমোদন হয়। এই সংশোধনের ফলে বর্তমান আইনের কয়েকটি ধারায় পরিবর্তন এসেছে, এনজিও নিবন্ধনের নিয়ম সহজ হয়েছে এবং অনুদান অবমুক্তির শর্তগুলোও সহজ করা হয়েছে। এখন থেকে বছরে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত অনুদানের ক্ষেত্রে আর অনুমোদনের প্রয়োজন হবে না। আইনটিকে আরও অংশীজনবান্ধব করা হয়েছে।
এছাড়া পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ ২০২৫–এর খসড়া আজকের সভায় উত্থাপিত হয়েছে। অধ্যাদেশটি আরও বিস্তারিতভাবে এবং সংশোধিত আকারে পরবর্তী পরিষদ সভায় উত্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
সভায় প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল আরব আমিরাতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়ার অভিযোগে বিভিন্ন সময়ে বন্দী থাকা অবশিষ্ট ২৪ জনকে শিগগিরই মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদকে অবহিত করেন। তিনি জানান, দুই-তিন দিনের মধ্যেই তারা দেশে ফিরবেন।
এদিকে দেশের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবনতির খবরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আজ দুপুরে তাঁর সহকারী একান্ত সচিবের পাঠানো বার্তায় রোগমুক্তি কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া চাওয়া হয়।
শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসও গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানান। তিনি বলেন, তিনি নিয়মিতভাবে চিকিৎসার আপডেট নিচ্ছেন এবং প্রয়োজনীয় সব চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সুস্থতাই এখন দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস ও চোখের নানা জটিলতায় ভুগছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দুটি মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে তিনি দুই বছরের বেশি সময় কারাগারে ছিলেন। পরে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ করোনাকালে নির্বাহী আদেশে তাঁর সাজার কার্যকারিতা স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেয় সরকার, যা পরবর্তী সময়ে বারবার মেয়াদ বাড়ানো হয়। তবে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ তখন দেওয়া হয়নি।
গত বছরের ৫ আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পূর্ববর্তী সরকারের পতনের পর তিনি সম্পূর্ণ মুক্তি পান। এরপর চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান এবং সেখানে ১১৭ দিন অবস্থানের পর ৬ মে দেশে ফেরেন। দেশে ফেরার পর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছিল। সবশেষ গত ২৩ নভেম্বর (রবিবার) সন্ধ্যায় শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।