নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের চৌমুহনীতে অবরোধ সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুই জন নিহত হয়েছে।
এ সময় অর্ধশতাধিক বিএনপি-যুবদলকর্মী আহত হয়। অবরোধকারীদের হামলায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে দাবি পুলিশের।
নিহতরা হলেন- বেগমগঞ্জ উপজেলার শিবপুর গ্রামের তোফায়েল আহমদের ছেলে মো. মিজানুর রহমান রুবেল (৩১) ও চৌমুহনী হাজিপুর গ্রামের খোরশেদ আলম বাবুচির ছেলে মহিউদ্দিন (৩২)।
নিহতদের নিজেদের কর্মী দাবি করে বৃহস্পতিবার নোয়াখালীতে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে জেলা বিএনপি।
বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে চৌমুহনী রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় ছয়টি মোটরসাইকেলে আগুন ও ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়।
গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নোয়াখালী আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন- বেগমগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুরের নূর মোহাম্মদের ছেলে জাহাঙ্গীর (৩০), বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনীর গণিপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে সাহাব উদ্দিন (৩২), উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের বেলাল হোসেনের ছেলে মাসুদের রহমান (১৩) ও ঝিনাইদহ জেলার বাঁধখালি এলাকার আমজাদ হোসেনের ছেলে ও জমিদারহাট ব্যাংকের আনসার সদস্য জামাল হোসেন (৩৩)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বুধবার বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী বাজারে অবরোধের সমর্থনে চৌমুহনী পৌরসভা বিএপির সভাপতি জহির উদ্দিন হারুন ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক বাবু কামাঙ্কা চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে চৌমুহনী বাজার থেকে একটি মিছিল বের করে বিএনপির নেতা কর্মীরা।
মিছিলটি ফেনী রোডের কাচারি বাড়ী মসজিদ পর্যন্ত গিয়ে পুনরায় বাজারের দিকে আসার পথে রেইল লাইন এলাকায় এসে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এতে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়।
এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি ছুড়ে। এতে পুলিশ, পথচারী, ব্যবসায়ীসহ অন্তত বিএনপির অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়। এ সময় সংঘর্ষকারীরা ছয়টি মোটরসাইকেলে আগুন দেয় ও বাজারে ব্যাপক ভাঙচুর।
জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক বাবু কামাঙ্কা চন্দ্র দাস নিহত রুবেল ও মহিউদ্দিনকে যুবদলের কর্মী দাবি ও হরতালের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা অর্তকিত হামলা চালিয়েছে। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে যুবদলকর্মী রুবেল নিহত ও অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়।
এ ব্যাপারে বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইনুল হক জানান, বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিল থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়েছে। এতে এসআই সাইফুল শিকদারসহ তিন পুলিশ আহত হয়েছে। সংঘর্ষে দুইজন নিহত হওয়ার বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি। পুলিশের গুলির হিসাবও বলতে পারেনি তিনি।
নোয়াখালী আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. ফরিদ উদ্দিন জানান, রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ দু’টি লাশ এসেছে।