সিউল, ২০ মার্চ ২০১৪:
বছরের প্রথম প্রান্তিকে এশিয়ার শীর্ষ কোম্পানিগুলোর ব্যবসায় আস্থা বেড়েছে। চীন, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার দুর্বল অবস্থার চেয়ে ফিলিপাইন ও দক্ষিণ কোরিয়ার মজবুত অবস্থান বেশি জোরদার হওয়ায় এ আস্থা বেড়েছে। থমসন রয়টার্স ও ইনসিডের এক জরিপে বেরিয়ে এসেছে এ তথ্য। খবর রয়টার্সের।
থমসন রয়টার্স ও ইনসিডের ‘এশীয় ব্যবসায় আস্থা সূচক’ বছরের প্রথম প্রান্তিকে ৬৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে এ সূচকের অবস্থান ছিল ৬২ পয়েন্টে। উল্লেখ্য, সূচক ৫০ পয়েন্টের ওপরে থাকলে তা ইতিবাচক হিসেবে দেখা হয়।
জরিপ অনুযায়ী, বিশ্ব অর্থনীতির ভবিষ্যত্ নিয়ে অনিশ্চয়তা ও ব্যয় বৃদ্ধি এশীয় অঞ্চলের প্রতিষ্ঠানগুলোর সামনে এখনো সবচেয়ে বড় ঝুঁকি। জরিপে দেখা যায়, গাড়ি, খুচরা বিক্রি ও প্রাকৃতিক সম্পদ খাতে আস্থা বাড়লেও নির্মাণ শিল্পের আশাবাদ ততটা জোরালো নয়। দেশওয়ারি হিসেবে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুরের মজবুত অবস্থান সূচককে ওপরে তুললেও চীন, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের দুর্বলতা একে নিচে টেনে ধরেছে।
ফেব্রুয়ারিতে চীনের রফতানি অপ্রত্যাশিতভাবে কমেছে ১৮ শতাংশ। এতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্ অর্থনীতির দেশটির প্রবৃদ্ধি শ্লথ হয়ে পড়া নিয়ে বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ আরো বেড়েছে। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের চীন গবেষণা শাখার প্রধান স্টিফেন গ্রিন বলেন, ‘চীনে আস্থা ততটা জোরালো নয়। কারণ আগামীতে কী হবে, এ নিয়ে স্বচ্ছ ধারণা নেই কারোরই।’
সম্পত্তি, আর্থিক ও প্রযুক্তি খাতে এশিয়ার ১১টি দেশের দুই শতাধিক কোম্পানির ওপর জরিপ চালিয়ে নির্ণীত হয় এ সূচক। জরিপে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়া কোম্পানিগুলোর ৬৫ শতাংশ ব্যবসায়িক আস্থা নিয়ে ভালো-মন্দ কিছু বলেনি। ৩১ শতাংশ বলেছে ইতিবাচক আর ৩ দশমিক ৯২ শতাংশ নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে।
ব্যবসায়িক আস্থার সবচেয়ে জোরালো ভাব দেখা গেছে ফিলিপাইনে। বছরের প্রথম প্রান্তিকে পূর্ব এশিয়ার দেশটির করপোরেট আস্থা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এখানকার ১২ জন অংশগ্রহকারীর প্রত্যেকেই ইতিবাচক আস্থা প্রকাশ করায় সূচক ১০০ পয়েন্টে পৌঁছে যায়। অবশ্য দেশীয় অর্থনীতি নিয়ে জোরালো আশাবাদ ব্যক্ত করলেও বিশ্ব অর্থনীতির অনিশ্চিত অবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এর বেশির ভাগ।
ফিলিপাইনের অধিকাংশ কোম্পানি নতুন সরবরাহ আদেশের পাশাপাশি কর্মসংস্থান বেড়েছে বলে জানায়। নভেম্বরের শুরুতে স্মরণকালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতির পর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে দেশটির সরকার ৩ দশমিক ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে বৃহত্ পরিসরে পুর্নগঠন কার্যক্রম হাতে নেয়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সার্বিক ব্যবসায়িক মনোভাব বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ইতিবাচক ছিল। দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা রাজনৈতিক সংকটের কারণে থাইল্যান্ড ছিল সে অঞ্চলের একমাত্র ব্যতিক্রম। সেখানে ব্যবসায়ীরা আশাবাদের কথা বলেননি।
সরবরাহ আদেশ বাড়ার কল্যাণে রফতানিতে নির্ভরশীল উত্তর এশিয়া, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যবসায়িক আস্থা মজবুত অবস্থানে ছিল। জাপান থেকে অংশ নেয়া ১৭টি কোম্পানি ব্যবসা আস্থা নিয়ে ভালো-মন্দ কিছু বলেনি। খাতওয়ারি হিসেবে খুচরা শিল্পে ব্যবসা আস্থায় বেশ ভালোই উন্নতি হয়েছে। অংশগ্রহকারী আটটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চারটি ব্যবসা আস্থা নিয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও বাকি অর্ধেক ইতিবাচক অবস্থান ব্যক্ত করেছে। ২০১৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে খুচরা শিল্পে ব্যবসা আস্থা সূচক ছিল ৫৮ পয়েন্টে। তবে এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে তা ১৭ পয়েন্ট বেড়ে ৭৫ পয়েন্টে দাঁড়ায়।
একই সময় এশিয়ার গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধেও ব্যবসা আস্থা বাড়তে দেখা গেছে। ১১ জন অংশগ্রহণকারীর মধ্যে প্রত্যেকেই ভালো-মন্দ কিছু জানাননি। প্রথম প্রান্তিকে সংশ্লিষ্ট সূচক ৫০ পয়েন্টে থাকলেও ২০১৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে এর অবস্থান ছিল ৩৩ পয়েন্টে। সূত্রঃ বণিকবার্তা।




























