সিউল, ২২ মার্চ ২০১৪:
মারিও। অসাধারণ পশু প্রেমিকদের একজন। চুয়ান্ন বছরের জীবনের বেশির ভাগ সময়ই কাটিয়েছেন চিড়িয়াখানার চৌহদ্দিতে। পশুপাখিদের দেখাশোনায়। কিন্তু গত কয়েক মাসে অনেকটাই বদলে গিয়েছে জীবন। ওষুধ, ইঞ্জেকশন, হাসপাতালের বিছানায় বন্দিদশা আর প্রতিনিয়ত ক্যানসারের কুরে কুরে খাওয়া যন্ত্রণা এখন তার সঙ্গী। তবু এক দিনের জন্য হাসপাতাল থেকে মুক্তি পেলেন তিনি। অ্যাম্বুল্যান্সে চেপেই পৌঁছে গেলেন তার সাবেক কর্মস্থল রটারডামের চিড়িয়াখানায়।
আর তার পরই ক্যামেরাবন্দি হল লাখ টাকার একটি ছবি। পুরনো বন্ধুকে দেখে এগিয়ে এল একটি জিরাফ। চুমু খেল তার মুখে। সেই ছবি-ই ঝড়ের বেগে ছড়িয়ে পড়ল ফেসবুকে। হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই মারিও ডাক্তারদের কাছে আবদার করেছিলেন, এক বার পুরনো ঠিকানায় ফিরতে চান। খবর যায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘অ্যাম্বুলেন্স উইশ ফাউন্ডেশন’-এর কাছে। জীবনের শেষ প্রান্তে পৌঁছে গিয়েছেন, এমন মানুষদের ইচ্ছাপূরণই এদের কাজ। মারিও-র কথা শুনতেই তাই তোড়জোড় শুরু করে দেন সংগঠনের কর্মীরা। তাদের অ্যাম্বুলেন্সে বিশেষ ব্যবস্থা আছে। বিশাল জানালা দিয়ে দু’চোখ ভরে আশপাশ দেখা যায়। সেই অ্যাম্বুলেন্সে করেই মারিও-কে নিয়ে যাওয়া হয় চিড়িয়াখানায়। নড়াচড়ার ক্ষমতা নেই মারিওর। তাই গায়ে চাদর চাপা দিয়ে বেল্ট দিয়ে বিছানার সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে দেয়া হয় শরীরটাকে। ঘুরিয়ে দেখানো হয় চার পাশ।
আসল ঘটনাটা ঘটল জিরাফের খাঁচার সামনে আসতেই। ওই খাঁচাটার কাছে কিছু ক্ষণ থাকতে চেয়েছিলেন মারিও। তাতেই এগিয়ে এল একটি জিরাফ। পুরানো সাথীকে চিনতে ভুল করেনি সে। এগিয়ে এসে মারিও-র গায়ে মুখ বুলিয়ে দিল। চুমু খেল মুখে।
স্বেচ্ছাসেবী কর্মী কিজ ভেল্ডবোয়ের বললেন, ‘ওরা কিন্তু ঠিক চিনতে পেরেছিল। বুঝেছিল পুরনো বন্ধু একেবারেই সুস্থ নেই। একটা দারুণ মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে রইলাম। মারিও-র মুখটা তখন আনন্দে ঝলমল করছিল।’