মঙ্গলবার । ডিসেম্বর ৯, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক বিজনেস ১২ জুলাই ২০২৫, ২:২৭ অপরাহ্ন
শেয়ার

পাল্টা শুল্কের শঙ্কায় বাংলাদেশ থেকে পোশাক অর্ডার স্থগিত করেছে ওয়ালমার্ট


পাল্টা শুল্কের শঙ্কায় বাংলাদেশ থেকে পোশাক অর্ডার স্থগিত করেছে ওয়ালমার্ট

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে ওয়ালমার্টের কয়েকটি পোশাক অর্ডার স্থগিত বা বিলম্বিত করা হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানায়, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের তিনজন কারখানা মালিক এবং ওয়ালমার্টের এক সরবরাহকারীর সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে তারা।

পোশাক রপ্তানির দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ বর্তমানে তৃতীয় বৃহত্তম দেশ। জাতীয় রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ এবং জিডিপির প্রায় ১০ শতাংশই আসে এই খাত থেকে।

কারখানার মালিকরা আশঙ্কা করছেন, আগামী ১ আগস্ট থেকে শুল্ক কার্যকর হলে অর্ডার কমে যাবে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, ৩৫ শতাংশ শুল্কের বাড়তি খরচ তারা বহন করতে পারবেন না।
এ অবস্থায় মার্কিন খুচরা বিক্রেতা ওয়ালমার্টের জন্য নির্ধারিত প্রায় ১০ লাখ সাঁতারের প্যান্টের অর্ডার স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্যাট্রিয়ট ইকো অ্যাপারেল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইকবাল হোসেন। তিনি জানান, অর্ডারটি স্থগিত করা হয় বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই)।

যুক্তরাষ্ট্রে আমদানির ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে নতুন করে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে কয়েকটি অর্ডার স্থগিত হয়েছে, এমনকি কিছু উৎপাদন কার্যক্রমও সাময়িকভাবে বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ক্লাসিক ফ্যাশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট মার্চেন্ডাইজিং ম্যানেজার ফারুক সৈকত এক ইমেইলে লেখেন, ‘আমরা যেমন আলোচনা করেছি, তেমনি দয়া করে নিচের সব বসন্তকালীন মৌসুমের অর্ডার স্থগিত রাখুন। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে আমদানির ওপর প্রচণ্ড হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।’’

এই ইমেইলটি প্যাট্রিয়ট ইকো অ্যাপারেল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইকবাল হোসেনসহ আরও কয়েকজনকে পাঠানো হয়। রয়টার্সের হাতে এই ইমেইলের অনুলিপি এসেছে।

ক্লাসিক ফ্যাশন একটি সাপ্লায়ার ও বাইয়িং এজেন্ট, যারা খুচরা বিক্রেতাদের পক্ষে অর্ডার দেয়।

সৈকত আরও লেখেন, ‘আমাদের ম্যানেজমেন্টের নির্দেশনা অনুযায়ী আপাতত বাংলাদেশে উৎপাদন কার্যক্রম স্থগিত করা হচ্ছে। যদি শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়টি মীমাংসা হয়, তাহলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা উৎপাদন আবার শুরু করব।’

তিনি রয়টার্সকে বলেন, সিদ্ধান্তটি ওয়ালমার্ট নয়, ক্লাসিক ফ্যাশন নিজেই নিয়েছে।

ওয়ালমার্টের কাছে এ বিষয়ে মন্তব্য চাইলে তারা কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

বাংলাদেশ সরকার বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্কহার কমানোর বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে অনিশ্চয়তা কাটছে না।

ঢাকার জিন্স প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য যদি ৩৫ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকে, তাহলে টিকে থাকা খুব কঠিন হবে। সত্যি বলতে কি, তখন এখনকার মতো অর্ডার আর আসবে না।’

এই প্রতিষ্ঠানটি এইচঅ্যান্ডএমসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক খুচরা ব্র্যান্ডের জন্য কাজ করে। রুবেলের ধারণা, ক্রেতারা হয়তো কিছু শুল্ক চাপ তাদের ওপর চাপিয়ে দেবেন, তবে তা আর্থিকভাবে সম্ভব নয়।

 

নিউজ পাওয়া যায়নি