নৌ পরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, আমদানি-রপ্তানিতে গড়ে ৩০ শতাংশ ট্যারিফ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। শুক্রবার (১৮ জুলাই) বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিদর্শনে এসে এ তথ্য জানান তিনি।
নৌ পরিবহন উপদেষ্টা বলেন, এটি কোনো একক সিদ্ধান্ত নয়। মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “বিশ্বের অন্যান্য বড় বন্দরের তুলনায় চট্টগ্রামের বর্তমান ট্যারিফ এখনো অনেক কম। এমনকি মোংলা বন্দরের চেয়েও কম।”
তিনি বলেন, “এটি কোনো একক সিদ্ধান্ত নয়। মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” নৌ উপদেষ্টা বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দরের ট্যারিফ ১৯৮৬ সালের পর আর বাড়ানো হয়নি। এতদিনের ব্যবধানে অবশেষে এ পরিবর্তন আসছে। এতে রাজস্ব আয় বাড়বে, যদিও আমদানি-রপ্তানিকারকদের কিছু অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হবে।”
পরিদর্শনকালে তিনি বন্দর নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো গুজব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “এমন সংবেদনশীল বিষয়ে অপ্রমাণিত তথ্য ছড়িয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করবেন না। সরকার বন্দর পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও দক্ষতা নিশ্চিত করতে চায়।”
উন্নত ব্যবস্থাপনার জন্য বন্দর পরিচালনায় আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন অপারেটর আনার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন উপদেষ্টা সাখাওয়াত। তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “বন্দর পরিচালনার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতেই থাকবে। অপারেটর বদল efficiency বাড়ানোর জন্য, ব্যক্তিগত কোনো স্বার্থ নেই।”
তিনি বলেন, “সিঙ্গাপুরের মতো বিশ্বের বহু আধুনিক পোর্টেই অপারেটররা প্রাইভেট, কিন্তু নিয়ন্ত্রণ থাকে সরকারের। আমাদেরও আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হতে চাইলে প্রযুক্তি, দক্ষতা এবং বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব দরকার।”
তিনি জানান, গত ৭ জুলাই সাইফ পাওয়ারটেকের পরিবর্তে চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটির অপারেশন পরিচালনার দায়িত্ব নৌবাহিনীকে দেওয়া হয়। এর পর থেকেই কার্যক্রমে গতি এসেছে বলে দাবি করেন তিনি।
“নেভির সঙ্গে যৌথভাবে ড্রাইডক পরিচালিত এনসিটি এখন প্রতিদিন গড়ে ৩২০০ কনটেইনার হ্যান্ডল করছে— যা পূর্বের তুলনায় প্রায় ১৩% বেশি,” বলেন উপদেষ্টা।
এনসিটির পূর্ববর্তী অপারেটরদের প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, “১৭-১৮ বছর যারা কাজ করেছেন, তারা খারাপ করেননি। কিন্তু এখন সময় আরও কার্যকর ও আধুনিক ব্যবস্থাপনার। তাই পরিবর্তন দরকার ছিল।”
এদিন আন্তর্জাতিক মানের নতুন কেমিক্যাল শেড উদ্বোধন করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “আমরা আশাবাদী, চট্টগ্রাম বন্দর দক্ষিণ এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ পোর্ট হিসেবে গড়ে উঠবে। শুধু কাঠামো নয়, দক্ষতাও বাড়াতে হবে।”
পরিদর্শনের সময় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।





















