
প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে ভার্চুয়ালী ভাষণ দিচ্ছেন
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বেশ কড়া ভাষায় বলেছেন, ইসরায়েলের সব চেষ্টার বিপরীতেও ফিলিস্তিনি জনগণ তাদের ভূমিতে অটল থাকবে এবং ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকেই নিজেদের দেশ পুনর্গঠন করবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের মানুষ জলপাই গাছের মতো মাটিতে মূল গেঁথে থাকবে। পাথরের মতো দৃঢ়, আমরা ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উঠে নিজের দেশ পুনর্গঠন করব।’
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ভাষণ দেন মাহমুদ আব্বাস। এসময় তিনি গাজা ও পশ্চিম তীরে দখলদারিত্বের অবসান ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা কামনা করেন।
মাহমুদ আব্বাস বলেন, যতই ক্ষত-রক্তপাত বাড়ুক কিংবা কষ্ট দীর্ঘায়িত হোক, তা ফিলিস্তিনিদের বাঁচার ও টিকে থাকার ইচ্ছাকে ভেঙে দিতে পারবে না। তিনি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং ১৯৬৭ সালের সীমানা নির্ধারণ করে পূর্ব জেরুসালেমকে তাদের রাজধানী হিসেবে দেখতে চান।
আব্বাস আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে অনুরোধ জানান—ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি ন্যায়সংগত ও সঠিক কাজ করার এখনই সময়, যেন তারা অবৈধ দখল থেকে মুক্তি পায় এবং ইসরায়েলি রাজনীতির বন্দিত্বে না পড়ে। তিনি বলেন, যদি ন্যায় প্রতিষ্ঠা না হয়, শান্তিও সম্ভব নয়; আর ফিলিস্তিন মুক্ত না থাকলে ন্যায়ও সম্ভব নয়।
প্রেসিডেন্ট আব্বাস ইহুদি বসতি সংক্রান্ত কার্যক্রমকেও কঠোরভাবে সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, সেটলাররা দিনের আলোয় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সুরক্ষায় ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছে, ঘর, ক্ষেত ও গাছ পোড়ায়, গ্রাম আক্রমণ করে এবং নিরস্ত্র নাগরিকদের ওপর হামলা চালায়। এছাড়া জেরুসালেম, হেব্রন ও গাজা উপত্যকার ইসলামিক ও খ্রিস্টান ধর্মীয় স্থাপনা-সমূহে হওয়া ধ্বংসযজ্ঞকে আন্তর্জাতিক আইনের ধারায় অনৈতিক ও অপরাধমূলক আখ্যা দিয়েছেন এবং এসব স্থানের ধ্বংসকেই ঐতিহাসিক স্থিতিকাঠামোর স্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে দেখেন।
ভাষণে আব্বাস কিছু প্রস্তবনা উল্লেখ করেন। সেগুলো হলো- গাজায় তাৎক্ষণিক ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি; শর্তহীন মানবিক সহায়তা প্রবেশ নিশ্চিতকরণ ও অনাহারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার বন্ধ; উভয় পক্ষের সকল বন্দি ও জিম্মি মুক্তি; গাজা থেকে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার ও অবৈধ বসতি স্থাপন বন্ধ; গাজা ও পশ্চিম তীর পুনর্গঠনের জন্য আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের পূর্ণ প্রশাসনিক দায়িত্ব গ্রহণ; ইসরায়েলের কাছে আটক ফিলিস্তিনি কর রাজস্ব মুক্তি ও অর্থনৈতিক অবরোধ প্রত্যাহার; যুদ্ধ শেষে এক বছরের মধ্যে রাষ্ট্রপতি ও সংসদ নির্বাচন এবং অস্থায়ী সংবিধান প্রণয়ন।
আব্বাস বলেন, এসব বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, সৌদি আরব, ফ্রান্স, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে ফিলিস্তিন প্রস্তুত।























