
পাহাড়ি ঢাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে উত্তপ্ত লাভা, আর আগ্নেয়গিরির চূড়া থেকে উঠছে ঘন ধোঁয়া
আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের ব্যারেন দ্বীপে ভারতের একমাত্র সক্রিয় আগ্নেয়গিরি আবারও অগ্ন্যুৎপাত শুরু করেছে। পোর্ট ব্লেয়ার থেকে প্রায় ১৪০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে আন্দামান সাগরে অবস্থিত এই জনবসতিহীন দ্বীপে ২০ সেপ্টেম্বর প্রবল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এর পরই আন্দামানে ৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। তবে কোনো বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর মেলেনি।
ভারতীয় নৌবাহিনী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্বীপটির অগ্ন্যুৎপাতের ভিডিও শেয়ার করেছে। সেখানে দেখা গেছে, পাহাড়ি ঢাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে উত্তপ্ত লাভা, আর আগ্নেয়গিরির চূড়া থেকে উঠছে ঘন ধোঁয়া। বিশেষজ্ঞদের মতে, ১৩ ও ২০ সেপ্টেম্বর দু’দফায় স্ট্রম্বোলিয়ান ধরনের অগ্ন্যুৎপাত হয়েছে, যা থেকে এখনও ধীরে ধীরে লাভা ও গ্যাস নির্গত হচ্ছে।
যদিও স্থানীয় জনগণের জন্য কোনো সতর্কতা জারি হয়নি, পরিবেশবিদরা সতর্ক করেছেন—অগ্ন্যুৎপাতের ছাই ও গ্যাস সামুদ্রিক প্রাণী ও প্রবাল প্রাচীরের ক্ষতি করতে পারে। বিমান চলাচলও এতে প্রভাবিত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। বর্তমানে ভারতীয় নৌবাহিনী ও ভূতাত্ত্বিক জরিপ দপ্তর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষজনিত সাবডাকশন জোনে অবস্থিত ব্যারেন দ্বীপ আসলে এক আগ্নেয় দ্বীপ, যার আয়তন প্রায় ৮ দশমিক ৩৪ বর্গকিলোমিটার। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ৩৫৪ মিটার। এখানে মানুষের বসতি না থাকলেও কিছু বন্যপ্রাণী ও পাখির আবাস রয়েছে। নিকটতম জনবসতিপূর্ণ দ্বীপ হলো স্বরাজ দ্বীপ (হ্যাভলক) ও নরকোন্ডাম।
ইতিহাসে ব্যারেন দ্বীপের প্রথম অগ্ন্যুৎপাত নথিভুক্ত হয় ১৭৮৯ সালে। এরপর ১৯৯১ সালে বড় ধরনের অগ্ন্যুৎপাত ঘটে, যা দীর্ঘদিন সক্রিয় ছিল। ২০১৭ ও ২০১৮ সালেও এই আগ্নেয়গিরি জেগে ওঠে।
যদিও দ্বীপটি জনশূন্য ও বন্ধ্যা, গবেষণার জন্য এটি এক গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচিত। বন দপ্তরের অনুমতি ছাড়া দ্বীপে প্রবেশের অনুমতি নেই, তবে দূর থেকে এই সক্রিয় আগ্নেয়গিরি পর্যবেক্ষণের সুযোগ রয়েছে।























