
বিহার রাজ্যের বিধান সভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ভারতের রাজনীতিতে ফের তুমুল বিতর্কের জন্ম দিয়েছে ‘অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ ইস্যু। বিহার রাজ্যের নির্বাচনী প্রচারণায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একাধিকবার দাবি করেছেন, বিরোধী দলগুলো রাজ্যে বাংলাদেশিদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। বিজেপি নেতাদের এ বক্তব্য ঘিরে বিরোধী শিবির ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এবার সরাসরি পাল্টা জবাব দিয়েছেন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) প্রধান ও দেশটির সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আসাদুদ্দিন ওয়াইসি।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ওয়াইসি এক বক্তব্যে বলেন, “মোদিজি বলছেন বিহারে বাংলাদেশি আছে। আমি বলছি, বিহারে কোনো বাংলাদেশি নেই। তবে বাংলাদেশ থেকে আপনার একজন বোন এখন দিল্লিতে বসে আছেন। তাকে বাংলাদেশে পাঠান। চাইলে আমরা সীমান্তে নিয়ে গিয়ে ফেরত দিয়ে আসব।”
ওয়াইসির এই বক্তব্য স্পষ্টভাবে নাম না করে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে দেওয়া হয়েছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে। উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন। এরপর থেকে তিনি দিল্লিতে অবস্থান করছেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদি সম্প্রতি স্বাধীনতা দিবসের ভাষণসহ বিভিন্ন নির্বাচনী সমাবেশে ‘অনুপ্রবেশকারী’ শব্দটি ব্যবহার করে আসছেন। তার দাবি, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা দেশে ‘জনসংখ্যাগত সংকট’ তৈরি করছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর বিহারের পূর্ণিয়ায় এক সমাবেশে তিনি বলেন, বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট ক্ষমতায় এলে অবৈধ অভিবাসীদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে।
বিরোধী শিবিরও একই অভিযোগ তুলে বলছে, বিজেপি নির্বাচনী সুবিধা নিতে ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ ইস্যু ব্যবহার করছে। তবে ওয়াইসির কটাক্ষপূর্ণ মন্তব্যে বিতর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে, কারণ তিনি সরাসরি শেখ হাসিনার দিল্লি অবস্থানকে যুক্ত করেছেন মোদির বক্তব্যের সঙ্গে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আসন্ন নির্বাচনে বিহার গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য হওয়ায় এই ইস্যুটি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠবে। বিজেপি যেমন অনুপ্রবেশকারীর প্রসঙ্গকে সামনে রাখছে, তেমনি বিরোধী দলগুলো এটিকে রাজনৈতিক চাল বলে সমালোচনা করছে। ওয়াইসির সাম্প্রতিক মন্তব্য এতে আরও আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে।























