
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ের ইনার অ্যাপ্রোচ জোনের একেবারে পাশে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অবস্থান জননিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি তৈরি করছে বলে মনে করছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। তারা বলছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ভবনগুলো রাজউক ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (সিভিল এভিয়েশন) অনুমোদন নিয়ে গড়ে উঠেছে কিনা, তা এখনই তদন্ত করা জরুরি।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) রাজধানীর বাংলামোটরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তারা। ‘মাইলস্টোন স্কুলে বিমান দুর্ঘটনা: জননিরাপত্তা এবং উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রের দায় ও করণীয়’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিআইপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান বলেন, ১৯৯৫ সালের ঢাকা মহানগর উন্নয়ন পরিকল্পনা (ডিএমডিপি) এবং ২০০৮-০৯ সালের প্রণীত প্রথম ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) অনুযায়ী, যেখানে বর্তমানে মাইলস্টোন স্কুল গড়ে উঠেছে, সেই স্থানটি ছিল জলাধার হিসেবে চিহ্নিত। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে তা পরিবর্তন হয়ে সেখানে গড়ে উঠেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
তিনি বলেন, এমন স্থাপনা নির্মাণে রাজউকের অনুমোদন অবশ্যই প্রয়োজন। কাজেই তারা দায় এড়াতে পারে না। আবার সিভিল এভিয়েশনের অনাপত্তি ছাড়াও সেখানে রাজউক অনুমোদন দিতে পারে না। একটি বিমানবন্দরের অ্যাপ্রোচ জোনে এভাবে স্থাপনা গড়ে ওঠা এই দুই সংস্থার সমন্বয়হীনতার পরিষ্কার প্রমাণ।
বিআইপির সভাপতি অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ঢাকার মতো জনবহুল শহরে প্রশিক্ষণ বিমানের ওড়াউড়ি কোনোভাবেই নিরাপদ নয়। নগরায়নের ক্ষেত্রে ফ্লাইং অ্যাপ্রোচ জোন সংরক্ষণ করা জরুরি ছিল। কিন্তু জলাভূমি রূপান্তরের মাধ্যমে সেখানে উন্নয়ন কীভাবে অনুমোদন পেল, তা খতিয়ে দেখা দরকার।
তিনি প্রশ্ন রাখেন, “ফ্লাইং অ্যাপ্রোচ জোনে ভবন নির্মাণের পেছনে রাজউক কার স্বার্থে ও কী উদ্দেশ্যে ডিএমডিপি অনুসরণ না করে ছাড় দিয়েছে? এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া দরকার।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিআইপির সহসভাপতি শাহরিয়ার আমিন, কোষাধ্যক্ষ মোসলেহ উদ্দীন হাসান, বোর্ড সদস্য আবু নাঈম সোহাগ এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তামজিদুল ইসলাম। তিনি গবেষণা দলের করা একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
নগর পরিকল্পনাবিদরা বলেন, উন্নত বিশ্বে বিমানবন্দর শহরের বাইরে থাকে এবং মাঝখানে থাকে ‘বাফার জোন’। ঢাকায় সেই আন্তর্জাতিক মান উপেক্ষা করেই গড়ে উঠছে স্থাপনা, যা ভবিষ্যতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।




















