
আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে ইউনিসেফের ‘ইয়াং পিপল অ্যাডভাইজরি গ্রুপ’ (ওয়াইপিএজি)। তরুণদের অর্থবহ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ।
ওয়াইপিএজি গঠিত হয়েছে ইউনিসেফের ‘ইয়াং লিডারশিপ প্রোগ্রাম’-এর সাবেক সদস্যদের (অ্যালামনাই) নিয়ে। ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের ‘লি কুয়ান ইউ স্কুল অব পাবলিক পলিসি’-এর সঙ্গে যৌথভাবে আয়োজিত ওই প্রোগ্রাম তরুণদের দক্ষতা, নেতৃত্ব ও নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে, যা এখন বাস্তব ও টেকসই প্রভাব বিস্তারে কাজে লাগবে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গত বছর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেওয়া বক্তব্যে এমন পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানান, যেখানে তরুণরা বিকশিত হতে পারবে, উদ্ভাবন করবে এবং নেতৃত্ব দেবে। তার সেই আহ্বানের প্রতিফলন হিসেবেই ওয়াইপিএজি গঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন,যখন আমরা তরুণদের জন্য বিনিয়োগ করি, তখন তারা নেতৃত্ব দেয়, অনুপ্রাণিত করে এবং ইতিবাচক বাস্তব পরিবর্তন নিয়ে আসে। ওয়াইপিএজি শুধু একটি প্ল্যাটফর্ম নয়—এটি এমন একটি শক্তি, যা জবাবদিহিতা, অন্তর্ভুক্তি ও কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করবে।
তিনি আরও জানান, এই তরুণেরা ইতিমধ্যেই পরিবর্তন আনার প্রতিশ্রুতি দেখিয়েছে। এখন তারা শিশুদের অগ্রাধিকার ও অধিকার রক্ষায় ইউনিসেফ এবং অংশীজনদের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করবে।
ওয়াইপিএজির সদস্যরা ইউনিসেফের কর্মসূচি প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নে কৌশলগত সহায়তা দেবে, যাতে কর্মসূচিগুলো তরুণদের প্রয়োজনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। তারা স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে শিশু অধিকার বিষয়ক অ্যাডভোকেসি পরিচালনা করবে, তরুণ অংশগ্রহণকারীদের মেন্টর হিসেবে কাজ করবে এবং ইউনিসেফ অ্যালামনাইদের নেতৃত্বে নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নে যুক্ত থাকবে।
বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ওয়াইপিএজি চালু হয়েছে। সামনে জাতীয় নির্বাচন—যেখানে তরুণদের কণ্ঠস্বর আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ওয়াইপিএজি নিশ্চিত করবে, এই আলোচনায় শিশু অধিকারও সমানভাবে গুরুত্ব পায়।
মালয়েশিয়া, ইরাক ও থাইল্যান্ডে সফলভাবে চালু হওয়া একই ধরনের মডেল থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ওয়াইপিএজি তৈরি হয়েছে। ইউনিসেফের বিশ্বাস—তরুণদের নেতৃত্ব ও দক্ষতায় বিনিয়োগ করলে অন্তর্ভুক্তিমূলক, কার্যকর ও টেকসই পরিবর্তন সম্ভব।
ওয়াইপিএজি তরুণদের জন্য একটি বাস্তব প্রভাব তৈরি করার মঞ্চ, যা শিশু অধিকার, নেতৃত্ব বিকাশ এবং সামাজিক পরিবর্তনে নতুন দ্বার খুলতে পারে।




















