রাজধানীর শাহবাগে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে আন্দোলনরত প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
বুধবার (২৭ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে ঘটনাস্থল শাহবাগ মোড়ে গিয়ে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি জানান, বৃহস্পতিবারই এ ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হবে।
কমিশনার উপস্থিত হলে শিক্ষার্থীরা পুলিশের ডিসি মাসুদকে বহিষ্কারের দাবি জানান। তবে শিক্ষার্থীরা কমিশনারের বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং পুলিশের আচরণের কঠোর সমালোচনা করেন।
এর আগে সকালে পূর্বঘোষিত ‘লংমার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি আদায়ে শাহবাগে অবস্থান নেন। দুপুরে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এসময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল, টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে শিক্ষার্থী ও পুলিশ সদস্য উভয়পক্ষের অনেকে আহত হন।
ঘটনার পর থেকে আন্দোলনকারীরা ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনের সড়ক অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর জানান, শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কারণে শাহবাগ এলাকায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। জনদুর্ভোগ এড়াতে কাঁটাবন, মৎস্য ভবন ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় হয়ে বিকল্প সড়ক চালু করা হয়েছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবি, পুলিশের হামলায় ৫০-৬০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। অন্যদিকে পুলিশের দাবি, শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল ছুড়ে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে আহত করেছেন।
দুপুরে প্রকৌশল পেশায় বিএসসি ডিগ্রিধারীদের দাবির যৌক্তিকতা যাচাই ও সুপারিশ প্রণয়নের জন্য আট সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে সরকার। তবে সেই কমিটি প্রত্যাখ্যান করে শিক্ষার্থীরা। পরিবর্তে তারা ৫ দফা দাবি উপস্থাপন করেছেন।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো-
১. আজকের হামলার ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলমকে প্রকাশ্যে দুঃখ প্রকাশ ও জবাবদিহি করতে হবে।
২. আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী রোকনের ওপর হামলাকারী ও পুলিশের সংশ্লিষ্ট সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
৩. প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে গঠিত বর্তমান কমিটি বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের নিয়ে নতুন কমিটি গঠন করতে হবে।
৪. পূর্বে ঘোষিত ৩ দফা দাবি নির্বাহী আদেশে দ্রুত প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করতে হবে এবং তিন উপদেষ্টা—ফওজুল করিম, আদিলুর রহমান ও সৈয়দা রেজওয়ান হাসানকে শিক্ষার্থীদের সামনে এসে নিশ্চয়তা দিতে হবে।
৫. হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার খরচ সরকারকে বহন করতে হবে এবং ভবিষ্যতে আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
