
বেগম খালেদা জিয়া।। ফাইল ছবি
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা গত তিন দিন ধরে একই পর্যায়ে রয়েছে। পরিবার ও দল তাঁকে বিদেশে নেওয়ার প্রস্তুতি নিলেও বর্তমান শারীরিক অবস্থা বিমানের ধকল সামলানোর মতো নয় বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। শনিবার তিনি দুয়েকটি কথা বললেও সামগ্রিকভাবে তিনি এখনো সংকটাপন্ন।
চিকিৎসকরা জানান, খালেদা জিয়ার কিডনির ডায়ালাইসিস নিয়মিতভাবে করা হচ্ছে। শনিবার রাত ১০টায় একটি ডায়ালাইসিস সম্পন্ন হয়, যা অবস্থার উন্নতি না করলেও কিছুটা স্থিতিশীলতা এনে দিয়েছে। আগামী কয়েক দিন তাঁর চিকিৎসার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বোর্ডের সদস্যরা মনে করছেন।
২৩ নভেম্বর তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার গভীর রাতে অবস্থার অবনতি ঘটে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে এবং তিনি সামান্য নড়াচড়া করতে পারছেন। পরিবার ও দল তাঁর উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল জানান, ভিসা, এয়ার অ্যাম্বুলেন্স এবং বিদেশে সম্ভাব্য চিকিৎসার ব্যবস্থা নিয়ে কাজ চলছে। তিনি বিমানে ভ্রমণের উপযোগী হলেই দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস, লন্ডন ক্লিনিক এবং অন্যান্য দেশের বিশেষজ্ঞরা অনলাইনে চিকিৎসা দিচ্ছেন।
এদিকে দলের একটি সূত্র জানিয়েছে, সোমবার চীনের একটি চিকিৎসক দল ঢাকায় এসে তাঁর শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনা করতে পারে। চিকিৎসকেরা জানান, কিডনি সমস্যার পাশাপাশি হৃদ্যন্ত্রে জটিলতা ও অগ্ন্যাশয়ে তীব্র প্রদাহে তাঁর অবস্থা আরও জটিল হয়েছে।
মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার বলেন, তিনি স্থিতিশীল থাকলেও এখনো শঙ্কামুক্ত নন; অক্সিজেন লেভেলও কিছুটা কম। শনিবার রাতে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেন জানান, গত তিন দিন তাঁর অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। তাঁকে সিসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
খালেদা জিয়ার ফুসফুসে সংক্রমণ ও নিউমোনিয়ার পাশাপাশি কিডনি, লিভার, ডায়াবেটিস ও আর্থ্রাইটিস–সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে। একটি জটিলতার চিকিৎসা দিতে গেলে আরেকটির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। তাঁকে লন্ডন, সিঙ্গাপুর বা চীনে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে, তবে সব সিদ্ধান্তই নির্ভর করছে তাঁর বর্তমান শারীরিক অবস্থা ও মেডিকেল বোর্ডের মতামতের ওপর।























