
আফগানিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের লেখা বই ও নারী-সম্পর্কিত বিষয় পড়ানো নিষিদ্ধ করেছে তালেবান প্রশাসন। সাম্প্রতিক এক নির্দেশনায় বিশ্ববিদ্যালয় পাঠ্যসূচি থেকে শতাধিক নারী লেখকের বই বাদ দেওয়ার পাশাপাশি মানবাধিকার ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সংক্রান্ত পাঠদানও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, তালেবান মোট ৬৮০টি বইকে ‘উদ্বেগজনক’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে প্রায় ১৪০টি বই নারী লেখকদের রচনা। এমনকি বিজ্ঞান-সংক্রান্ত গ্রন্থ ‘সেফটি ইন দ্য কেমিক্যাল ল্যাবরেটরি’ কেও তালিকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, এসব বই শরিয়াহ ও সরকারের নীতির বিরোধী।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিষিদ্ধ করা হয়েছে নারী-সম্পর্কিত অন্তত ১৮টি বিষয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’, ‘দ্য রোল অব উইমেন ইন কমিউনিকেশন’, ‘উইমেন’স সোসিওলজি’সহ আরও বেশ কিছু বিষয়। তালেবান কর্মকর্তারা বলছেন, এসব কোর্স শরিয়াহবিরোধী এবং সমাজে ‘অপসংস্কৃতি’ ছড়াতে পারে।
অন্যদিকে তালেবান প্রশাসনের দাবি, তারা ইসলামী শরিয়াহ ও আফগান সংস্কৃতির ব্যাখ্যা অনুযায়ী নারীদের অধিকারকে সম্মান করছে। তবে আন্তর্জাতিক মহল বলছে, ধারাবাহিকভাবে নারীদের শিক্ষা ও পেশাগত সুযোগ সীমিত করে তাদের সমাজের বাইরে ঠেলে দিচ্ছে তালেবান।
২০২১ সালে ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে নারীদের শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করে আসছে গোষ্ঠীটি। ষষ্ঠ শ্রেণীর পর নারীদের স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে আগেই। গত বছর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ধাত্রীবিদ্যা (মিডওয়াইফারি) কোর্স, যা নারীদের শেষ পেশাগত প্রশিক্ষণের পথ ছিল।
এর পাশাপাশি গত সপ্তাহেই আফগানিস্তানের অন্তত ১০টি প্রদেশে ফাইবার-অপটিক ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কর্মকর্তাদের ভাষ্য, অসদাচরণ ঠেকাতে সর্বোচ্চ নেতার নির্দেশেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো নারীদের আরও প্রান্তিক করে তুলছে এবং আফগানিস্তানকে বিশ্বের সবচেয়ে কঠোর নারী-নিষিদ্ধ সমাজে পরিণত করছে।























