মঙ্গলবার । ডিসেম্বর ৯, ২০২৫
প্রবাস ডেস্ক প্রবাস ৫ নভেম্বর ২০২৫, ৯:২২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার

শ্রমিক থেকে সফল শিল্পপতি: মিশর প্রবাসী মুজিবুরের সাফল্যের গল্প


mujibur

মজিবুর ইসলাম || ছবি- সংগৃহীত

পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর স্বপ্নে একদিন প্রিয় মাতৃভূমি ছেড়েছিলেন বরিশালের হিজলা উপজেলার হরিনাথপুর গ্রামের ছেলে মুজিবুর ইসলাম। আজ সেই স্বপ্নই তাঁকে নিয়ে গেছে অন্য এক উচ্চতায়— সাধারণ শ্রমিক থেকে হয়ে উঠেছেন মিশরের সফল শিল্পপতি।

২০০২ সালে হাতে অল্প কিছু টাকা ও মনে অসীম বিশ্বাস নিয়ে মুজিবুর পাড়ি জমান মিশরে। কায়রোর এক পোশাক কারখানায় সাধারণ শ্রমিক হিসেবে শুরু হয় তাঁর প্রবাস জীবন। দিনে কঠোর পরিশ্রম, রাতে স্বপ্ন— এই নিয়মে কেটে যায় এক দশক।

অবশেষে ২০১০ সালে নিজের সঞ্চিত অর্থ ও পরিশ্রমের শক্তিতে কায়রোর বাংলাদেশি অধ্যুষিত ইল মার্গ এলাকায় প্রতিষ্ঠা করেন ছোট্ট একটি পোশাক কারখানা ‘রহমান অ্যাপারেলস’। কয়েকটি সেলাই মেশিন দিয়ে শুরু হওয়া সেই ক্ষুদ্র উদ্যোগ আজ পরিণত হয়েছে একটি বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানে, যেখানে কর্মরত আছেন দুই শতাধিক শ্রমিক, এর মধ্যে প্রায় ৭০ জন বাংলাদেশি।

মুজিবুর বলেন, “২০০২ সালে আমি সাধারণ শ্রমিক হিসেবে এসেছিলাম মিশরে। আজ আল্লাহর কৃপায় শত শত মানুষের কর্মসংস্থান দিতে পারছি — এটাই আমার সবচেয়ে বড় অর্জন।”

মিশরে বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যেও মুজিবুর ইসলামের রয়েছে ব্যাপক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। কেউ বিপদে পড়লে তিনিই আগে এগিয়ে আসেন, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।

তবে প্রবাস জীবনের কিছু সীমাবদ্ধতা নিয়েও আক্ষেপ করেন এই উদ্যোক্তা। তিনি জানান, “মিশরে এখনো বাংলাদেশের কোনো ব্যাংক নেই। বৈধ পথে টাকা পাঠাতে পারি না, বাধ্য হয়ে হুন্ডির মাধ্যমে পাঠাতে হয়। সরকার যদি এখানে একটি ব্যাংক খুলত, প্রবাসীরা অনেক উপকৃত হতো।”

বর্তমানে স্ত্রী ও একমাত্র কন্যাকে নিয়ে কায়রোর ইল মার্গ এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন মুজিবুর ইসলাম। তাঁর মেয়ে নাজিয়া রহমান কায়রোর বিখ্যাত আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে বর্তমানে সংসার পেতেছেন একজন আমেরিকান প্রবাসীর সঙ্গে।

মুজিবুর ইসলামের গল্প শুধু একজন প্রবাসীর সাফল্যের কাহিনি নয়— এটি এক বাংলাদেশির অধ্যবসায়, সততা ও স্বপ্নপূরণের প্রতীক। তিনি দেখিয়েছেন— ইচ্ছাশক্তি আর পরিশ্রম থাকলে, বিদেশের মাটিতেও ফুটে উঠতে পারে সাফল্যের বীজ।

নিউজ পাওয়া যায়নি