সিউল, ২ মার্চ, ২০১৪:
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কুনমিং শহরের একটি রেলস্টেশনে শনিবার সন্ধ্যায় একদল সন্ত্রাসীর এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে ২৯ জন নিহত ও ১শ’ ৩০ জন আহত হয়েছে। এ সময় পুলিশের গুলিতে সন্দেহভাজন চার হামলাকারীও নিহত হয়েছে। চীনা কর্তৃপক্ষ এ হামলার জন্য উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জিনজিয়াং প্রদেশের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দায়ী করেছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, কালো পোশাক পরা একদল লোক ছুরি নিয়ে স্টেশনে উপস্থিত লোকজনের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। তারা সামনে যাকে পেয়েছে তাকে ছুরিকাঘাত করতে থাকে।
অনলাইনে প্রকাশিত ছবিতে দেখা দেখা যায়, অনেক লোক রক্তাক্ত অবস্থায় স্টেশনে পড়ে আছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার খবরে রোববার বলা হয়, পুলিশের গুলিতে কমপক্ষে চার সন্দেহভাজন হামলাকারী নিহত হয়েছে। পুলিশ আহত এক সন্দেহভাজন নারীকে আটক করেছে এবং তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়া হামলাকারীদের খুঁজতে তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে।
কর্তৃপক্ষ একে ‘সংঘবদ্ধ, পূর্বপরিকল্পিত, সহিংস সন্ত্রাসী হামলা’ বলে উল্লেখ করেছে। কুনমিংয়ের নগর সরকার পরে জানায়, ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ক্লু দেখে মনে হচ্ছে জিনজিয়াংয়ের বিচ্ছিন্নতাবাদীরাই এ হামলা চালিয়েছে।
তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি এবং এ দাবির সত্যতাও নিশ্চিত করা যায়নি। জিনজিয়াংয়ের সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমরা চীনের কাছ থেকে স্বায়ত্ত্বশাসন এবং তাদের ধর্মের ওপর রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের অবসান চায়।
কুনমিংয়ের বাসিন্দা ইয়াং হাইফি বুকে ও পিঠে আঘাত পেয়েছেন। তিনি সিনহুয়াকে বলেন, ‘টিকিট কেনার সময় দেখলাম একদল লোক ছুরি হাতে হামলা করছে। এক লোক বড় ছোরা হাতে আমার দিকে দ্রুত এগিয়ে আসছিল। এ সময় অনেকের সঙ্গে আমিও দৌড়ে পালাই।’
প্রাথমিক খবরে বলা হয়েছিল, হামলাকারীরা সবাই পুরুষ ছিল। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা ও পুলিশ পরে জানায়, হামলাকারীদের মধ্যে নারীও ছিল। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেন।
প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং হামলার ঘটনা তদন্তে ‘সর্বাত্মক প্রচেষ্টার’ আহবান জানিয়েছেন। তিনি এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন।
চীনের বার্ষিক পার্লামেন্ট অধিবেশন শুরুর মাত্র কয়েক দিন আগে বর্বর এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত অক্টোবরে বেইজিংয়ের তিয়েনানমেন স্কয়ারে একটি গাড়ি ফুটপাতে দাঁড়ানো লোকজনের ওপর উঠে গেলে পাঁচ জন নিহত হয়। সেসময় ওই ঘটনার জন্যও জিনজিয়াং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দায়ী করে চীনা কর্তৃপক্ষ।























