
জামালের ছবি নিয়ে স্বজনদের আহাজারি
মাত্র কয়েক সপ্তাহ পর দেশে ফিরে বিয়ের পিঁড়িতে বসার কথা ছিল জামাল হোসেনের। প্রবাসজীবনের দীর্ঘ ১২ বছরের কষ্টের অবসান ঘটিয়ে নতুন জীবনের সূচনার অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। কিন্তু সেই অপেক্ষা এখন শুধুই কান্না আর শোকের নাম। ব্রুনাইয়ে নির্মাণস্থলে কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারালেন এই প্রবাসী যুবক।
নিহত জামালের বাড়ি ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের চর জাহাঙ্গালিয়া গ্রামে। তিনি ব্রুনাইয়ের চীনারুপাই শহরের একটি নির্মাণ প্রকল্পে ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দুপুরে কাজ করার সময় হঠাৎ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন জামাল। পরে সহকর্মীরা দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বিকেলে এক সহকর্মী পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে মৃত্যুর খবর জানালে এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।
বুধবার (২৩ জুলাই) জামালের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, শোকে স্তব্ধ পুরো পরিবার। মা নিরুতাজ বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার ছেলে দেশে ফেরার জন্য কত অপেক্ষা করছিল। এখন শুধু লাশ হয়ে ফিরবে!” ছোট বোন কুলসুম বলেন, “ভাই বলেছিল ৩ আগস্ট দেশে আসবে। অনেক কিছু এনেছে আমাদের জন্য। এবার দেশে এসে বিয়ে করবে বলেছিল। এখন তো ভাইয়ের কফিন আসবে।”
জামালের ভগ্নিপতি সেকান্তর মিয়া জানান, মরদেহ স্থানীয় হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে হিমাগারে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুতের কাজ চলছে। তিনি দ্রুত মরদেহ দেশে পাঠাতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
প্রতিবেশীরা জানান, জামাল ছিলেন অত্যন্ত সৎ ও পরিশ্রমী একজন মানুষ। তার এমন মৃত্যুতে গোটা গ্রাম শোকে স্তব্ধ। সবাই তাকে খুব ভালোবাসত।
এদিকে, জামালের মৃত্যুর খবরে পুরো চর জাহাঙ্গালিয়া গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পরিবারসহ গ্রামের মানুষ অপেক্ষায় আছেন প্রিয় জামালকে শেষবারের মতো একনজর দেখার জন্য।





























