শনিবার । ডিসেম্বর ৬, ২০২৫
প্রবাস ডেস্ক প্রবাস ৫ অক্টোবর ২০২৫, ৭:১৭ অপরাহ্ন
শেয়ার

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রবাসী ফরহাদের করুণ মৃত্যু


farhad

নিহত ফরহাদ হাসান সানী। ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার হিজলীয়া গ্রামের প্রবাসী ফরহাদ হাসান সানী (৪৫)। দীর্ঘ ২২ বছর ধরে প্রবাস জীবনে সংগ্রাম করে পরিবারে সচ্ছলতা ফিরিয়েছিলেন তিনি। অথচ এক মুহূর্তের দুর্ঘটনায় সবকিছু থেমে গেল। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে পরিবারের সদস্যরা পাগলপ্রায়।

শনিবার (৪ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় রাত ১০টার দিকে সৌদি আরবের তাবুক শহরের প্রিন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ফরহাদ। রবিবার (৫ অক্টোবর) মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁর ছোট ভাই ডা. মো. দ্বীন ইসলাম মিঠু।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ফরহাদ সৌদি আরবের একটি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। শনিবার বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ৯টার দিকে কোম্পানির কাজ শেষে তাঁর ছোট ভাইকে সঙ্গে নিয়ে একটি প্রাইভেটকারে বাসায় ফিরছিলেন তিনি। পথে প্রাইভেটকারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে একটি পিলারের সঙ্গে সজোরে ধাক্কা লাগে। মুহূর্তেই গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ফরহাদ হাসান সানী গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে শহরের প্রিন্স হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত ফরহাদ হাসান সানী কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরফরাদী ইউনিয়নের হিজলীয়া গ্রামের মৃত দুলাল মিয়ার ছেলে। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী, তানহা (১৪) নামের এক মেয়ে এবং প্রিন্স (৭) নামের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটিকে হারিয়ে স্তব্ধ হয়ে গেছে গোটা পরিবার। মেয়ে তানহা বাবার মৃত্যুসংবাদে কান্নায় ভেঙে পড়েছে, ছোট ছেলে প্রিন্স এখনো বুঝতে পারছে না কেন সবাই কাঁদছে।

নিহতের ছোট ভাই ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালের সার্জন ডা. মো. দ্বীন ইসলাম মিঠু বলেন, ‘আমার ভাই ছিল আমাদের পরিবারের ভরসা। বাবা-মা নেই, তিনিই ছিলেন সবার আশ্রয়। তাঁর মৃত্যুতে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেলাম।’

গ্রামের মানুষ বলছে, ফরহাদ শুধু নিজের পরিবারের নয়, ছিল গ্রামের সবার প্রিয় মুখ। যেকোনো বিপদে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেন তিনি। এখন তাঁর মৃত্যুতে হিজলীয়া গ্রামে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।

পরিবার জানিয়েছে, বাংলাদেশ দূতাবাসের সহায়তায় মরদেহ দ্রুত দেশে আনার প্রক্রিয়া চলছে। প্রিয় মুখ ফরহাদের নিথর দেহ যখন মাটির দেশে ফিরবে, তখন কান্নায় ভেসে উঠবে তার প্রিয়জনদের বুকভরা অপেক্ষা।