
নিহত শফিকুল ইসলাম শফিক।
ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় বিদেশ পাড়ি দিয়েছিলেন প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম শফিক (৩৮)। কিন্তু পরিশ্রম আর স্বপ্নে গড়া সেই জীবন থেমে গেল প্রবাসের মাটিতেই। লিভারজনিত জটিলতায় পর্তুগালের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টার দিকে পর্তুগালের রাজধানী লিসবুনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন শফিকুল। দেড় মাস ধরে তিনি সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের নাগমুদ গ্রামের বড় মোল্লা বাড়ির মৃত নুরুজ্জামান মোল্লার ছেলে শফিকুল তিন ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ছিলেন। ছোটবেলাতেই বাবাকে হারিয়ে জীবনের সাথে লড়াই শুরু করেছিলেন তিনি। পরিশ্রম ও মেধার জোরে প্রকৌশল পেশায় প্রতিষ্ঠিত হন এবং প্রায় ১০ বছর আগে উচ্চশিক্ষার জন্য ইউরোপে পাড়ি জমান।
২০১৯ সালে তিনি বিয়ে করেন এবং স্ত্রীকে নিয়ে পর্তুগালে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস—দীর্ঘদিনের লিভার সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন, আর সেখানেই নিভে যায় তাঁর জীবনপ্রদীপ।
নিহতের মামাতো ভাই ইব্রাহিম আহমেদ আরজু বলেন, শফিক ছোটবেলা থেকেই খুব পরিশ্রমী ও মেধাবী ছিল। বাবার মৃত্যুর পরও সে হাল ছাড়েনি। প্রবাসে গিয়েও পরিশ্রম করত, স্বপ্ন ছিল পরিবারের জন্য কিছু করবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন অপূর্ণই রয়ে গেল।
নিহতের ভাগনে মোহাম্মদ তারেক জানান, আমার মামা সবার আদরের ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে পুরো পরিবার ভেঙে পড়েছে। আমরা চাই তাঁর মরদেহ যেন দ্রুত দেশে আনা হয়, যাতে শেষবারের মতো তাঁকে দেখতে পারি।
রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম রবীন শীষ বলেন, পরিবার থেকে আমাদের জানালে মরদেহ দেশে আনতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে।
প্রবাসের মাটিতে হারিয়ে গেল এক স্বপ্নবাজ তরুণের জীবন। তাঁর অকাল মৃত্যুতে এলাকায় নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। পরিবার, স্বজন ও গ্রামের মানুষ এখন অপেক্ষায়—কবে প্রিয় শফিকের নিথর দেহ ফিরে আসবে জন্মভূমির মাটিতে।





























