বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক পুনর্গঠনের এ সময়ে বাংলাদেশ একটি সক্রিয় ও দায়িত্বশীল সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
সিজিএস আয়োজিত ‘বে অব বেঙ্গল কনভারসেশন ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক পুনর্গঠনের সময় বাংলাদেশ একটি সক্রিয়, দায়িত্বশীল ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ভূমিকা রাখতে চায়।
তিনি বলেন, পরিবর্তনশীল আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় বাংলাদেশ জাতীয় স্বার্থ ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে অংশ নেবে।
পুনর্গঠনকালে পক্ষ বেছে নেওয়ার চেয়ে সঠিক পথ নির্বাচনই জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি। ক্ষমতার পরিবর্তনশীল কাঠামো মোকাবিলায় সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রেখে দৃশ্যমান ফল নিশ্চিত করার ওপরও তিনি জোর দেন।
বঙ্গোপসাগরের কৌশলগত গুরুত্ব তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ সেখানে নিছক করিডর হয়ে নয়, বরং কার্যকর অংশীদারিত্ব গড়ে প্রভাবশালী ভূমিকা রাখতে চায়।
ইউক্রেন, গাজা, সুদান ও মিয়ানমারের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় বিদ্যমান কাঠামো ব্যর্থ হয়েছে; তাই বহুপাক্ষিক ও আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও শক্তিশালী হতে হবে।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অভিযানে অংশগ্রহণকে মানবিক দায়িত্ব পালনে বাংলাদেশের অঙ্গীকার বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ভুয়া তথ্য, ডিপফেক ও এআই-নির্ভর প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ তথ্যক্ষেত্র সুরক্ষায় নিরাপত্তা ও অধিকার দুটিই রক্ষার মতো নিয়ন্ত্রক কাঠামো গড়ে তুলতে চায়।
অর্থনৈতিক পুনর্বিন্যাসে বহুমুখীকরণ ও আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারের প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন তিনি।
জলবায়ু ঝুঁকির মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়াকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে সহযোগিতামূলক কাঠামো ও প্রযুক্তি ভাগাভাগির আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ উদ্বোধনী বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য—‘প্রতিদ্বন্দ্বিতা, ভাঙন, পুনর্গঠন’, যেখানে তথ্যযুদ্ধ, এআই, জলবায়ু পরিবর্তন, আঞ্চলিক বাস্তবতা ও অভিবাসনসহ সমসাময়িক বৈশ্বিক ইস্যুতে আলোচনা হবে।























