রবিবার । ডিসেম্বর ৭, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক শিক্ষা ১ জুলাই ২০২৫, ১২:১৬ অপরাহ্ন
শেয়ার

ইউনেস্কো ও ক্রিহ্যাপ-এর উদ্যোগে আদিবাসী তরুণদের নিয়ে ‌‘আমাদের গল্প আমরা বলি’


ইউনেস্কো ও ক্রিহ্যাপ-এর উদ্যোগে আদিবাসী তরুণদের নিয়ে ‌‘আমাদের গল্প আমরা বলি’

উপকূলীয় শহর কক্সবাজারে তিন দিনের এক বিশেষ কর্মশালায় অংশ নিতে জড়ো হয়েছিলেন চাকমা, ত্রিপুরা ও রাখাইন সম্প্রদায়ের ২০ জন উদ্যমী তরুণ। এই কর্মশালার উদ্দেশ্য ছিল শুধুমাত্র শেখা নয়, বরং নিজেদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে পুনরায় আবিষ্কার ও সংরক্ষণে সক্ষম হয়ে ওঠা।

বাংলাদেশের আদিবাসী সমাজে ছড়িয়ে থাকা শতাব্দী প্রাচীন সাংস্কৃতিক জ্ঞান ও ঐতিহ্য আজও তাদের পরিচয়ের এক অপরিহার্য অংশ। এটি বাংলাদেশের সামগ্রিক সাংস্কৃতিক বৈচিত্রেরও পরিচায়ক। এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা ইউনেস্কোর ২০০৩ সালে গৃহিত “ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ সংরক্ষণ কনভেনশন” অনুযায়ী কমিউনিটি-লেড বা সমাজ-পরিচালিত পদ্ধতিতে ঐতিহ্য নথিভুক্তকরণ ও সংরক্ষণের কৌশল সম্পর্কে ধারণা অর্জন করেন। মৌখিক ইতিহাস, লোকজ শিল্প, প্রথা ও সামাজিক রীতিনীতি- সবকিছুর সুরক্ষা ও প্রচারে প্রয়োজনীয় জ্ঞান, দক্ষতা এবং আত্মবিশ্বাস অর্জনে সহায়ক হয় এই আয়োজন।

গত ২৯ জুন থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এই আবাসিক কর্মশালাটি আয়োজন করে ইউনেস্কো ঢাকা অফিস ও ইন্টারন্যাশনাল ট্রেনিং সেন্টার ফর ইন্ট্যাঞ্জিবল কালচারাল হেরিটেজ ইন দ্য এশিয়া-প্যাসিফিক রিজিয়ন (ক্রিহ্যাপ)। পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন সংগঠন ‘জাবারাং কল্যাণ সমিতি’র সহায়তায় আয়োজিত এই কর্মশালায় তরুণদের তাদের নিজ নিজ সম্প্রদায়ের সংস্কৃতির রক্ষক হিসেবে প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

কর্মশালার উদ্বোধনী বক্তব্যে ইউনেস্কো বাংলাদেশ-এর প্রধান সুসান ভাইজ বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি যে তরুণরা শুধু ভবিষ্যৎ নয়, বর্তমানের পরিবর্তনেরও অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি। এই কর্মশালাটি আদিবাসী তরুণদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ, যেখানে তারা কমিউনিটিভিত্তিক ইনভেন্টরি পদ্ধতির মাধ্যমে তাদের ঐতিহ্য সংরক্ষণ সম্পর্কে গভীরভাবে জানার সুযোগ পাবে।”

কর্মশালাটি পরিচালনা করেন ইউনেস্কো স্বীকৃত আইসিএইচ আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ শুভা চৌধুরী এবং বাংলাদেশি গবেষক ও লেখক রিফাত মুনিম। অংশগ্রহণকারীরা এই সময়কাল জুড়ে তাত্তি¡ক আলোচনা, দলীয় কার্যক্রম এবং মাঠ পর্যায়ে বাস্তব চর্চার সমন্বয়ে একটি নিবিড়ভাবে শেখার অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল পানেরছড়া রাখাইন গ্রামের স্থানীয় জনসমষ্টির সাথে সাক্ষাৎ ও সংলাপের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক উপাদান চিহ্নিতকরণ ও তালিকাভুক্তির অনুশীলন।