সুস্থতা আল্লাহর দেওয়া এক অনন্য সম্পদ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সু্স্থ দেহে দিন শুরু করে, পরিবার-পরিজনের সঙ্গে নিরাপদে থাকে এবং তার কাছে সারা দিনের খাদ্য মজুদ থাকে, তাহলে যেন পুরো পৃথিবীর সম্পদ তাকে দেওয়া হয়েছে (তিরমিজি, হাদিস: ২৩৪৬)। তাই সুস্থতা রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
হাদিস শরিফে এমন অনেক খাবারের কথা উল্লেখ রয়েছে, যেগুলোকে রাসুলুল্লাহ (সা.) ঔষধি গুণসম্পন্ন বলেছেন। নিচে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো—
আজওয়া খেজুর: রাসুল (সা.)-এর প্রিয় ফল আজওয়া খেজুর জান্নাতের ফল হিসেবে বর্ণিত। প্রতিদিন সাতটি আজওয়া খেলে বিষ ও জাদু ক্ষতি করতে পারে না (বুখারি, হাদিস : ৫৪৪৫)। হৃদরোগের জন্যও এটি উপকারী।
কালোজিরা: রাসুল (সা.) বলেছেন, কালোজিরায় সব রোগের উপশম আছে, তবে মৃত্যুর ব্যতীত (মুসলিম, হাদিস : ৫৬৫৯)। ইউনানি, আয়ুর্বেদিক ও কবিরাজি চিকিৎসায় এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে।
জয়তুন: কোরআনে মুবারক গাছ হিসেবে জয়তুনকে উল্লেখ করা হয়েছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, “তোমরা জয়তুন তেল খাও ও শরীরে মলম দাও, এটি বরকতময় গাছের তেল” (তিরমিজি, হাদিস : ১৮৫১)।
জমজমের পানি: রাসুল (সা.) বলেছেন, জমজম পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পানি, এতে রয়েছে তৃপ্তির খাদ্য ও রোগের আরোগ্য (আল-মুজামুল আউসাত, হাদিস : ৩৯১২)। বিশ্বাসের সঙ্গে পান করলে কাঙ্ক্ষিত উপকার লাভ হয়।
মধু: কোরআনে বলা হয়েছে, মৌমাছির উৎপাদিত পানীয়তে রয়েছে মানুষের জন্য আরোগ্য (সুরা নাহল : ৬৮-৬৯)। রাসুল (সা.) মধু পছন্দ করতেন এবং নানা রোগের চিকিৎসায় তা ব্যবহারের পরামর্শ দিতেন।
অলিভ (জলপাই): কুরআন ও হাদিসে উল্লেখিত “বরকতময়” ফল। অলিভ তেল ও অলিভ শরীরের জন্য স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন— “তোমরা জলপাই তেল ব্যবহার করো এবং তা খাও। কেননা তা একটি বরকতময় গাছ থেকে উৎপন্ন।” (তিরমিজি, হাদিস ১৮৫১)।
দুধ: রাসুল (সা.) দুধকে পূর্ণাঙ্গ খাদ্য বলেছেন। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন: “আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন কোনো খাবার আমি জানি না যা দুধের চেয়ে উত্তম। এতে খাদ্য ও পানীয় উভয়ই রয়েছে” (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৫৯)।
শসা ও খেজুর: রাসুল (সা.) মাঝে মাঝে খেজুরের সঙ্গে শসা খেতেন (বুখারি, হাদিস : ৫৩৫১)। এটি শরীরকে সুষম পুষ্টি দেয়।
বার্লি (যব): রাসুল (সা.) যব দিয়ে তৈরি খাবার সাওইক ও তালবিনা ব্যবহার করতেন। হাদিসে এসেছে, “তালবিনা (যবের স্যুপ) অসুস্থের মনকে প্রশান্তি দেয় এবং দুঃখ দূর করে” (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৪৪৫)।
এসব খাবার শুধু শরীরের জন্য উপকারী নয়, বরং সুন্নাহ অনুযায়ী গ্রহণ করলে আত্মার জন্যও বরকত নিয়ে আসে। তাই সুস্থতা ধরে রাখতে এসব বরকতময় খাবার গ্রহণ করা জরুরি।



























