শনিবার । ডিসেম্বর ৬, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক শিক্ষা ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৭:১১ অপরাহ্ন
শেয়ার

জাকসু নির্বাচন: ভোট গ্রহণের সময় দিনভর যত অভিযোগ


JUCSU-Vote
প্রায় ৩৩ বছর পর অনুষ্ঠিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন কাটলো নানা অভিযোগ-বিতর্কে। ভোট শুরুর ছয় ঘণ্টা পর সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয় ছাত্রদলের প্যানেল। অন্যদিকে পোলিং এজেন্ট ও ভোট প্রক্রিয়ায় অসঙ্গতির অভিযোগ তোলে ছাত্রশিবিরের প্রার্থীরা।

ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) প্যানেলও নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা জানায়। তাদের অভিযোগ, সম্প্রীতির ঐক্যের ভিপি প্রার্থী অমর্ত রায়ের প্রার্থিতা ‘ষড়যন্ত্রমূলকভাবে’ বাতিলের মাধ্যমে শুরু থেকেই অনিয়ম চলছে।

ছাত্রদল তাদের অভিযোগে জানায়- তাজউদ্দীন হলে প্রবেশে বাধা, একই ভোটারের একাধিকবার ভোট দেওয়া, ভোটার তালিকায় ছবি না থাকা, ২১ নম্বর হলে মব সৃষ্টি এবং জাহানারা ইমাম হলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্যানেলের জিএস প্রার্থী তানজিলা হোসাইন বৈশাখী বলেন, “এই নির্বাচন নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। আমরা ওএমআর মেশিন চাইনি, কিন্তু জামায়াত নেতার সরবরাহকৃত সেই প্রতিষ্ঠানের ব্যালটেই ভোট হচ্ছে।”

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের প্যানেলও ব্যালট ও ওএমআর মেশিন নিয়ে অভিযোগ তোলে। জিএস প্রার্থী আবু তৌহিদ মো. সিয়াম অভিযোগ করেন, প্রার্থীদের ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে বাধা দেওয়া হয়েছে, অতিরিক্ত ব্যালট ছাপানো হয়েছে এবং ভোট চলাকালীন ছাত্রদল-শিবিরের প্রার্থীরা কেন্দ্রের সামনে লিফলেট বিতরণ করলেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

অন্যদিকে ছাত্র শিবিরের প্যানেল পাল্টা অভিযোগ তোলে ছাত্রদলের বিরুদ্ধে। তাদের দাবি, ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের আধিক্য, হলে সাবেক নেতাদের উপস্থিতি এবং ভোটারদের প্রভাবিত করার ঘটনা ঘটেছে।

ভোট চলাকালে আরও নানা অভিযোগ ওঠে- দেরিতে ভোট শুরু হওয়া, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের ভোটে ব্রেইল ব্যালট না থাকা, কয়েকটি হলে ভোটগ্রহণ অর্ধ ঘণ্টা বন্ধ থাকা, ভোটারের লাইন দীর্ঘ হলেও প্রত্যাশিত হারে ভোট না পড়া এবং ভোটদানের পর আঙুলে অমোচনীয় দাগ না দেওয়া।

শুধু প্রার্থীরাই নন, প্রশাসনের বিরুদ্ধেও ওঠে অসংগতি, গাফিলতি, স্বজনপ্রীতি ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ। অনিয়মের প্রতিবাদ জানিয়ে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের তিন শিক্ষক। ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক নাহরীন ইসলাম খান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “প্রশাসন শুরু থেকেই দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করছে। নানা অনিয়ম, কারসাজি করছে। এ ধরনের নির্বাচনের দায়ভার আমাদের নেওয়া উচিত নয়। তাই আমরা এই নির্বাচন বর্জন করলাম।”