শনিবার । ডিসেম্বর ৬, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক রাজধানী ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ৯:৫৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার

ফুটলো দিনের আলো, স্পষ্ট হলো কড়াইলের ক্ষত


 

korail bosti

আগুনে অঙ্গার কড়াইল বস্তি

আরেকটি কর্মব্যস্ত দিনের শুরুর জানান দিয়ে রাজধানী ফুটেছে দিনের আলো। তাই ব্যস্ত এ নগরে শুরু হয়েছে গন্তব্যে পৌছানোর ছুটোছুটি। কিন্তু এই শহরের কোন এক টুকরো ভূমিতে এ আলোতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে ভয়াবহ আগুনের ক্ষতচিহ্ন। মাথায় হাত দিয়ে কিংবা বুক ভরা কষ্ট আর কপালে হাজারো চিন্তার ছাপ নিয়ে দিন শুরু করেছেন রাজধানীর কড়াইল বস্তির ঘর হারানো মানুষগুলো।

সারারাত আগুনের সঙ্গে প্রাণপণে লড়াই করে বেঁচে যাওয়া মানুষগুলো তাকিয়ে দেখেছেন—তাদের সবকিছুই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এ ছাড়া খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে অনেক পরিবার। নিজেদের ঘরের ধ্বংসস্তূপে ফিরে অনেকে চেষ্টা করছেন—সামান্য যা অবশিষ্ট আছে তা উদ্ধার করতে।

korail bosti 2

বিভিন্ন সংস্থা ও রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে কিছু সহায়তা মিললেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। তারা জানান, চারদিকে কংক্রিট ছাড়া যেন আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। ভয়াবহ আগুন প্রায় সবকিছুই শেষ করে দিয়েছে।

ক্ষতিগ্ৰস্তদের অভিযোগ, পাওয়া সহায়তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল—যার কারণে সামনে কীভাবে দিন চলবে তা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় রয়েছেন তারা।

এর আগে, মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস।

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম দোলন জানান, রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। বস্তির ঘিঞ্জি এলাকা এবং পানির সমস্যা থাকায় আগুন নেভানোতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। তবে ১৯টি ইউনিট কাজ করেছে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত হয়। তবে ঘটনাস্থলে তীব্র পানি সংকটের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কর্মীদের বেশ বেগ পেতে হয়। ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় কমিটি এখনও আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানাতে পারেনি।

কড়াইল বস্তির ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বহু পরিবার গৃহহীন হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, “ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে সরকার প্রয়োজনীয় সব সহায়তা নিশ্চিত করবে।”

Korail bosti 4

তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম জোরদার করা এবং অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান করে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও এক বিবৃতিতে ঘটনাটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান।