শনিবার । ডিসেম্বর ৬, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক প্রবাস ১২ জুলাই ২০২৫, ১১:২২ অপরাহ্ন
শেয়ার

দেশে ফিরতে চান মালদ্বীপ প্রবাসী অসুস্থ তৈয়ব


toyubমালদ্বীপে আকস্মিক ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে জীবন থমকে গেছে প্রবাসী শ্রমিক তৈয়ব উদ্দিনের। হঠাৎ করে শরীরের এক পাশ অচল হয়ে যাওয়ায় গত ১০ দিন ধরে হাসপাতালের বেডেই কাটছে তার সময়। এখন তার একমাত্র আকুতি—যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরে উন্নত চিকিৎসা নেওয়া। কিন্তু হাতে নেই পর্যাপ্ত অর্থ।

৫৪ বছর বয়সী তৈয়ব উদ্দিনের বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার তুলাতুলি গ্রামে। ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় পাঁচ বছর আগে তিনি মালদ্বীপে পাড়ি জমান এবং কুদাহুভাধু আইল্যান্ডের বিভিন্ন নির্মাণাধীন প্রকল্পে কাজ শুরু করেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি সেখানে অবৈধভাবে কাজ করছিলেন।

চলতি মাসের শুরুর দিকে কর্মস্থলে হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যান তৈয়ব। সহকর্মীরা দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে রাজধানী মালের ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানান, তিনি ব্রেইন স্ট্রোক করেছেন এবং তার শরীরের এক পাশ পুরোপুরি অচল হয়ে গেছে।

বর্তমানে তার দেখাশোনা ও চিকিৎসার খরচ বহন করছেন মালদ্বীপে কর্মরত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুই প্রবাসী আহমেদ ও রফিকুল ইসলাম। তারা জানান, “তৈয়ব ভাইয়ের এখানে তেমন কোনো আত্মীয় নেই। আমরাই তার পাশে আছি। কিন্তু দীর্ঘদিন তার চিকিৎসার খরচ চালিয়ে যাওয়া আমাদের পক্ষেও সম্ভব নয়।”

তারা আরও বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দ্রুত বাংলাদেশে পাঠানো দরকার। ইতোমধ্যে বিষয়টি বাংলাদেশ হাইকমিশনের হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে। হাইকমিশনের পক্ষ থেকে তাকে দেশে পাঠানোর বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।

গত ১০ জুলাই রাতে তৈয়ব উদ্দিনকে হাসপাতালে দেখতে যান বাংলাদেশ হাইকমিশনের কল্যাণ সহকারী মো. জসিম উদ্দিন। তিনি চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে তার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন।

তৈয়ব উদ্দিন ছিলেন তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। হঠাৎ তার অসুস্থতায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন স্ত্রী হাফেজা বেগম। ফোনে তিনি জানান, “আমি খুব অসহায় হয়ে পড়েছি। চিকিৎসার খরচ তো দূরের কথা, এখন ছেলেমেয়েদের খাওয়ানোর সামর্থ্যও নেই। আমার স্বামীকে দেশে আনার জন্য যে টাকা দরকার, তা জোগাড় করার কোনো উপায় নেই। বাংলাদেশ সরকার ও প্রবাসীদের কাছে আমার একটাই অনুরোধ—আমাদের পাশে দাঁড়ান, না হলে ভিক্ষা ছাড়া আর কোনো পথ থাকবে না।”