শনিবার । ডিসেম্বর ৬, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক আদালত ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৮:০১ অপরাহ্ন
শেয়ার

ভারত থেকে পুশ-ইন হওয়া আসামের সাকিনা বেগম এখন আদালতের হাতে


sakina-begom

সাকিনা বেগম (বাঁয়ে)

ভারত থেকে বাংলাদেশে পুশ-ইন হওয়া ৬৫ বছরের বৃদ্ধা সাকিনা বেগমকে হেফাজতে নিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দ্যা কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্ট–১৯৫২ এর অধীনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বর্তমানে তাকে রাখা হয়েছে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানায়।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত ‘ঢাকার মিরপুরে আশ্রয় নেওয়া ভারতের সাকিনা বেগমকে যেভাবে খুঁজে পেল বিবিসি’ শীর্ষক খবরের সূত্র ধরে সেদিনই দুপুরে মিরপুরের যে বাসায় সাকিনা বেগম আশ্রয় নিয়েছিলেন, সেখান থেকে তাকে হেফাজতে নেয় ভাষানটেক থানা পুলিশ।

ভাষানটেক থানার ওসি শাহ মোহাম্মদ ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘তিনি ভারতীয় নাগরিক। কোনো বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ও বসবাস করছিলেন। এজন্য তাকে হেফাজতে নিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।’

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সাকিনা বেগম ভারতের আসাম রাজ্যের নলবাড়ি জেলার বরকুরা গ্রামের বাসিন্দা। বিবিসির অনুসন্ধানে ভিডিও কলে তার পরিবারও বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে তাকে দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া এখন আইনি জটিলতায় আটকে আছে।

সাকিনা বেগমকে আশ্রয় দেওয়া পরিবারটির সদস্য ক্লান্তি আক্তার জানান, ‘পুলিশ আসার সময় তিনি যেতে চাইছিলেন না। বারবার বলছিলেন—‘হায় আল্লাহ, আমার কী হবে’। পুলিশ তাকে নিয়ে যাওয়ার পর আমরা থানায় গিয়েছিলাম, কিন্তু পরে জানানো হয় তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈধ কাগজপত্র ছাড়া বাংলাদেশে প্রবেশ করা আইনের চোখে অপরাধ। এ ক্ষেত্রে আদালতে তার ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে। পাশাপাশি ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তাকে গ্রহণ করবে কিনা সেটিও গুরুত্বপূর্ণ।

সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারতের বন্দি বিনিময় চুক্তি কিংবা ভারতীয় দূতাবাসের ট্রাভেল পাস—এই দুই পথেই ফেরত পাঠানোর সম্ভাবনা আছে। তবে মামলা থাকায় প্রক্রিয়াটি মোটেও সহজ হবে না। এখানে আইন ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি মুখোমুখি অবস্থায় পড়বে।’

বিবিসি বাংলাকে সাকিনা বেগম জানিয়েছিলেন, যেভাবেই হোক নিজের পরিবারের কাছেই ফিরে যেতে চান তিনি। তবে মামলা হওয়ায় সাকিনা বেগমের ভাগ্য নির্ভর করছে আদালতের সিদ্ধান্ত এবং দুই দেশের কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার ওপর বলে মনে করেন আইন বিশেষজ্ঞরা।

সূত্র: বিবিসি বাংলা