
তিন বছরের মেয়ে আনিশাকে কোলে নিয়ে আরজু। ছবি: সংগৃহীত
ওমানের মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার আট প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিক। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন মোহাম্মদ আরজু (৩১)। এখনো শোক থামেনি তার বাড়িতে। কান্নার মাঝেও সবাই তাকিয়ে আছে তিন বছরের মেয়ে আনিশা জান্নাতের দিকে — যে হয়তো বুঝে গেছে, বাবা আর কখনও ফিরবেন না।
বাবার ছবির দিকে তাকিয়ে নিরবে কান্না করছে ছোট্ট আনিশা। কখনো জিজ্ঞেস করছে, “বাবা কবে আসবে?” — এই প্রশ্নে ভেঙে পড়ছেন সবাই।
আরজুর বাবা শহীদ উল্লাহ অশ্রুসিক্ত চোখে বলেন, “ছেলে সন্তানের ভবিষ্যতের আশায় ওমানে গিয়েছিল। এখন সেই সন্তানই বুঝে গেছে, তার বাবা নেই। কীভাবে ওকে বুঝাবো, বাবা আর ফিরবে না?”
দেশে থাকতে কুলিং কর্নারের দোকান চালাতেন আরজু। পরিবারের সচ্ছলতার আশায় বড় ভাই মিলাদের সঙ্গে প্রায় দুই বছর আগে পাড়ি জমান ওমানে। সেই প্রবাসই কেড়ে নিল তার প্রাণ।
একই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান সন্দ্বীপের আরও সাত জন— আমিন মাঝি, মো. রকি, সাহাব উদ্দিন, মো. বাবলু, মো. জুয়েল, মো. রনি ও আরও একজন প্রবাসী শ্রমিক। মাছ ধরতে যাওয়ার পথে তাদের বহনকারী গাড়িটি ওমানের দুকুম সিদরা এলাকায় দুর্ঘটনায় পড়ে।
সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মংচিংনু মারমা বলেন, নিহতদের লাশ দেশে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত পরিবারের পাশে থাকা ও সরকারি অনুদানের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তিন বছরের আনিশা হয়তো ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না মৃত্যুর মানে, কিন্তু সে জানে— বাবা আর ফিরে আসবে না। আরজুর অকাল মৃত্যু শুধু একটি পরিবার নয়, পুরো সন্দ্বীপের হৃদয়ে গভীর শোকের দাগ রেখে গেছে।





























