শনিবার । ডিসেম্বর ৬, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক আদালত ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ৩:৪৬ অপরাহ্ন
শেয়ার

হাসিনা ও কামালের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়ার নির্দেশ


মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের দেশে থাকা সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে জুলাই বিপ্লবে শহীদদের পরিবার ও আহতদের ক্ষতিপূর্ণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গতকাল রোববার (১৭ নভেম্বর) প্রসিকিউটর গাজী মনোয়ার হোসেন তামিম সাংবাদিকদের বলেন, ট্রাইব্যুনালের আইনের বিধান অনুযায়ীই এই আবেদন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘একটি জীবনের ক্ষতি কখনো পূরণ হয় না, তবে আর্থিক ক্ষতিপূরণ পরিবারগুলোকে আংশিকভাবে সহায়তা করতে পারে। যেহেতু আইনে রয়েছে, তাই আমরা দোষীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার আবেদন করেছি। ন্যায়বিচারের স্বার্থে ট্রাইব্যুনাল যে আদেশ দেবেন, প্রসিকিউশন তা মেনে নেবে।’

এদিকে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে  মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এই রায় দেন।

আরেক অভিযোগে শেখ হাসিনাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

মামলার অন্য দুই আসামির মধ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

আরেক আসামি সাবেক আইজিপি ও মামলার রাজসাক্ষী চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এই মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে এ মামলায় মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়।

অভিযোগগুলো হচ্ছে-

 

প্রথম অভিযোগ

২০২৪ সালের ১৪ জুলাই আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। তিনি আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’, ‘রাজাকারের নাতি–পুতি’ বলে উল্লেখ করেন। ওই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ‘প্ররোচনা, সহায়তা ও সম্পৃক্ততায়’ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং সশস্ত্র ‘আওয়ামী সন্ত্রাসী’ ব্যাপক ও পদ্ধতিগতভাবে নিরীহ নিরস্ত্র ছাত্র ও সাধারণ মানুষের ওপর আক্রমণ করে।

দ্বিতীয় অভিযোগ

শেখ হাসিনা হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের ‘হত্যা করে নির্মূলের নির্দেশ’ দেন। এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।

তৃতীয় অভিযোগ

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাইদ হত্যায় প্ররোচনা, উসকানি।

চতুর্থ অভিযোগ

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজধানীর চাঁনখারপুল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছয়জনকে গুলি করে হত্যা করে।

পঞ্চম অভিযোগ

আশুলিয়ায় জীবিত একজনসহ মোট ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যা।