রবিবার । ডিসেম্বর ৭, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক জাতীয় ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৩৭ অপরাহ্ন
শেয়ার

বাংলাদেশে পাটভিত্তিক উৎপাদনে বড় বিনিয়োগে আগ্রহী চীন


China-BD

বাংলাদেশের সবুজ প্রযুক্তি, পাট, বস্ত্র ও ওষুধশিল্পে বৃহৎ বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীনা বিনিয়োগকারীরা। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঘোষিত উৎপাদন খাতের রূপান্তর পরিকল্পনার পরিপ্রেক্ষিতেই এ আগ্রহ তৈরি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে চীনের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক (এক্সিম ব্যাংক)–এর ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়াং দোংনিং এ আগ্রহের কথা জানান। বৈঠকে চীনের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব ফাইন্যান্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটির প্রেসিডেন্ট ড. মা জুনও উপস্থিত ছিলেন।

ইয়াং দোংনিং জানান, অবকাঠামো খাতে দীর্ঘদিন ধরে বিনিয়োগের পর এবার বাংলাদেশে উৎপাদন খাতে মনোযোগী হচ্ছে চীন। রুফটপ সোলার, পাটভিত্তিক জ্বালানি, বায়োসার, প্লাস্টিকের বিকল্প উৎপাদনসহ বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্পে তারা বিনিয়োগ করতে চায়। এসব সরাসরি উৎপাদন বিনিয়োগে অর্থায়নে এক্সিম ব্যাংকও প্রস্তুত।

ড. মা জুন বলেন, ঐতিহ্যবাহী পাটশিল্প চীনা কোম্পানিগুলোর কাছে বিশেষ আগ্রহের। স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে ইচ্ছুক তারা। বছরে ১০ লাখ টন পর্যন্ত পাট ব্যবহার করে জ্বালানি, সার ও বিকল্প প্লাস্টিক তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের। এতে পাটভিত্তিক যৌথ উদ্যোগে বড় সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে তিনি মনে করেন।

চীনের আগ্রহকে স্বাগত জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, চীনা বিনিয়োগকারীরা চাইলে বাংলাদেশকে উৎপাদনশীল পণ্য রপ্তানির এক সম্ভাবনাময় হাবে রূপান্তর করা সম্ভব। উন্নত দেশসহ চীনেও রপ্তানি বাড়বে। তিনি ওষুধ ও স্বাস্থ্যসেবাকে চীনা বিনিয়োগের সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, বিশ্বের বৃহত্তম সৌরশক্তি উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে চীন রুফটপ সোলারসহ সবুজ জ্বালানিতে বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা দিতে পারে। পাশাপাশি বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল, বিপুল তরুণ কর্মশক্তি এবং কারখানা স্থানান্তরের সুযোগ তুলে ধরে চীনা কোম্পানিগুলোকে বিনিয়োগে উৎসাহিত করেন তিনি।

ইয়াং দোংনিং জানান, এআই ও ই-কমার্স খাতেও বিনিয়োগের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে চীন- যে দুই ক্ষেত্রে দেশটি ইতোমধ্যে বৈশ্বিকভাবে শক্ত অবস্থানে রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে কারখানা স্থাপনের আমন্ত্রণ জানান। তিনি বলেন, সেখানে দেশের সবচেয়ে বড় সমুদ্রবন্দর এবং মিয়ানমার-থাইল্যান্ডসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজারের কৌশলগত নিকটতা বড় সুবিধা এনে দেবে। দক্ষিণ চীনের সঙ্গে রেল সংযোগ স্থাপনে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে এলে আঞ্চলিক সংযোগ বাড়বে এবং পণ্য রপ্তানিও সহজ হবে।

বৈঠকের শুরুতে হংকংয়ের একটি আবাসিক ভবনে আগুনে বহু প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক জানান প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকে এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ এবং ঢাকায় চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন উপস্থিত ছিলেন।