
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণ-অভ্যুত্থানের পরপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য থেকে পদত্যাগ করেছিলেন অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। এরপর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজ বিভাগে (ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগ) যোগদান করেছিলেন।
এদিকে, সম্প্রতি তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক বছরের সাবেটিকাল লিভ নিয়েছেন। পুরো শিক্ষকতা জীবনে অধ্যয়ন কিংবা গবেষণার জন্য এই ছুটি একবার কিংবা দুইবার নিতে পারেন বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো শিক্ষক। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর যেকোনো ধরনের ঝামেলা এড়াতে ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল এই ছুটি নিয়েছেন বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষেদের ডিন গণমাধ্যমকে বলেন, অধ্যাপক মাকসুদ কামালসহ সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭/৮ জন শিক্ষক এই ছুটি নিয়েছেন। একাডেমিক কাউন্সিলে সেটির অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে। তারা সবাই আওয়ামীপন্থী নীল দলের শিক্ষক। তাহলে বুঝাই যাচ্ছে, ৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের অধিভুক্ত। জানতে চাইলে এই অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. কাজী মতিন উদ্দিন আহমেদ বলেন, অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্প্রতি এই ছুটি নিয়েছেন। সাধারণত কোনো শিক্ষক বই লিখতে চাইলে কিংবা গবেষণার জন্য কোনো সংস্থায় কাজ করতে এই ছুটি নেন। তবে কিছু শর্তসাপেক্ষে শিক্ষকদের একবার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই ছুটি দেওয়া হয়।
কবে থেকে অধ্যাপক মাকসুদ কামালের এই ছুটি শুরু, এ বিষয়ে জানতে ঢাবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদকে একাধিক বার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। এরপর গত ৫ আগস্টের পর পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্বে ছিলেন। এর আগে ২০২০ সালের জুন মাস থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের (শিক্ষা) দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি।
২০১২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তিনি আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মাস্টারদা সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষ ছিলেন দুই মেয়াদে। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট এবং সিনেট সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
তিন বার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং চারবার সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন মাকসুদ কামাল। বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগ-সমর্থক শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের সাবেক এই আহ্বায়ক বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিবও ছিলেন।
অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল ২০০০ সালের মার্চে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগে প্রভাষক পদে যোগ দেন। একই বিভাগে ২০১০ সালে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান। বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের আগে তিনি বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানে (স্পারসো) বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার পদে প্রায় ছয় বছর কাজ করেন।



























