শনিবার । ডিসেম্বর ৬, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক স্বাস্থ্য ৪ অগাস্ট ২০২৫, ৭:২৭ অপরাহ্ন
শেয়ার

কমলো হার্টের রিংয়ের দাম



হৃদরোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা উপকরণ করোনারি স্টেন্ট (হার্টের রিং)-এর দাম কমিয়েছে সরকার। রোববার (২৯ জুলাই) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তিনটি কোম্পানির ১০ ধরনের স্টেন্টের দাম পুনঃনির্ধারণ করে কমানো হয়েছে। নতুন দামে স্টেন্টপ্রতি খুচরা মূল্য সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। স্টেন্টভেদে ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত কমানো হয়েছে। তবে একটি স্টেন্টের মূল্য অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

স্বাক্ষর করেছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, স্টেন্টের দাম সর্বোচ্চ ৩৬ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. মো. আকতার হোসেন জানিয়েছেন, মূল্য নির্ধারণ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মেডট্রনিক, অ্যাবট ভাসকুলার ও বস্টন সায়েন্টিফিক কোম্পানির ১০ ধরনের রিংয়ের দাম কমানো হয়েছে। ধাপে ধাপে অন্য কোম্পানির রিংয়ের দামও পুনঃনির্ধারণ করা হবে। নতুন মূল্য কার্যকর হবে আগামী সপ্তাহ থেকে।

স্টেন্ট আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, জীবনরক্ষাকারী পণ্যের মূল্য নির্ধারণে সরকারিভাবে একটি সুনির্দিষ্ট মূল্যনীতি থাকা প্রয়োজন, যাতে ইচ্ছামতো দাম বাড়ানো বা কমানো বন্ধ করা যায়। তবে তারা সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী স্টেন্ট বিক্রি করবেন বলেও আশ্বাস দিয়েছেন।

কী এই স্টেন্ট?

হৃদরোগ চিকিৎসায় বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি হলো অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি, যার অংশ হিসেবে হার্টে স্টেন্ট বা রিং পরানো হয়। এটি একটি জালাকৃতির ছোট ধাতব নল, যা সরু ক্যাথেটারের মাধ্যমে ধমনীতে প্রবেশ করিয়ে স্থাপন করা হয়। এটি রক্তনালিকে খোলা রাখতে সাহায্য করে এবং হৃদপিণ্ডে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে।

বাংলাদেশে ব্যবহৃত বেশিরভাগ স্টেন্ট আমদানি করা হয় বিদেশ থেকে। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, ইতালি, স্পেন, নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভারত— এসব দেশ থেকে রিং এনে থাকেন আমদানিকারকরা।

হাসপাতালগুলোতে এসব আমদানিকৃত রিংয়ের মূল্য তালিকা টানিয়ে রাখা হয়। রোগীরা সেখান থেকে নিজেদের সামর্থ্য ও প্রয়োজন অনুযায়ী রিং বেছে নেন, এবং চিকিৎসকের পরামর্শে সেটি হার্টে প্রতিস্থাপন করা হয়।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এই পদক্ষেপে দেশের লক্ষ লক্ষ হৃদরোগীর চিকিৎসা খরচ কিছুটা হলেও কমবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।