
গভীর রাতে তাসখন্দ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে প্লেন ল্যান্ড করেছে। প্লেন থেকে নামার পর থেকে বুঝতে পারছি ঠান্ডা কাহাকে বলে, কত প্রকার ও কি কি! ইমিগ্রেশনসহ সব প্রক্রিয়া শেষ হতে খুবই অল্প সময় লেগেছে। তারা উল্লেখ করার মতো এমন কিছুই জিজ্ঞেস করেনি।
তাসখন্দ এয়ারপোর্ট এর এক্সিট অংশ অতোটা বড় না, ছোটখাটো কিন্তু অনেক সুন্দর। এখানে লাগেজ নিতে আমাকে বেশি সময় বা কোনো বেগ পোহাতে হয়নি। এরপর ১০০ ডলার দিয়ে ১২ লক্ষ সোম (উজবেজিস্তানের মুদ্রা) পেয়েছি। বাংলাদেশি টাকায় ৬০০ (৬০ হাজার সোম) টাকা দিয়ে ৬০জিবি ডেটার এক মাস মেয়াদি সিমকার্ড (উজসেল) কিনলাম। এরপর রাত আড়াইটা থেকে ভাবতে বসেছি কখন রাত শেষ হবে আর আমি কখন এখানকার হোটেলে গিয়ে উঠবো।

তাসখন্দ, উজবেকিস্তান
এয়ারপোর্টের সাথেই একটা ওয়েটিং এর বিশাল জায়গা আছে, ওখানে গিয়ে বসেছি। কয়েকটা ফাস্টফুডসহ উজবেক ফুডের স্টল আছে। সেখান থেকে কফি আর স্যান্ডউইচ খাওয়া শেষ। আর তো সময় কাটে না। মনে হলো রাত যতোই হোক হোটেল উজবেকস্তানে চলে যাবো। এখানে আর নয়। ইয়ানডেস্ক অ্যাপ দিয়ে ট্যাক্সি কল করলাম। ট্যাক্সি চলে আসছে, ড্রাইভার ফোন দিয়েছে কিন্তু আমি তার কথা বুঝতে পারছি না। এখন কি হবে? আমি একটা তরুণ ছেলেকে দেখলাম, তার কাছে গিয়ে বললাম, আমি হোটেল উজবেকিস্তানে যাবো। ইয়ানডেক্স কল করেছি, ড্রাইভারের কথা বুঝতে পারছি না। তুমি কি আমাকে ড্রাইভারের সাথে কথা বলে আমাকে একটু হেল্প করতে পারো? সে কিছুটা ইংরেজি জানে। আমার কাছ থেকে ফোনটা নিয়ে ড্রাইভরের সাথে কথা বললো। তারপর আমাকে বললো, ট্যাক্সি এখানে আসবে না, কারণ জ্যাম তৈরি হয়। বাইরে নির্দিষ্ট জায়গায় ট্যাক্সি অপেক্ষা করছে। এখান থেকে বের হয়ে তোমাকে কয়েক শ’ গজ দূরে যেতে হবে। সেখানে ড্রাইভার অপেক্ষা করছে, সে তোমাকে হোটেলে নিয়ে যাবে।
আমি তাকে বললাম এতো রাতে রাস্তায় চলাচল কি সেফ হবে? আমার কথায় সে কিছুটা অবাক হয়ে বললো, অবশ্যই সেফ।
বাইরে যাাওয়ার জন্য পা বাড়ালাম। তারপর ভাবছি এই ভয়ংকর শীতের রাতে কোন দিকে ড্রাইভার আছে, আর কোন দিকে আমি তাকে খুঁজবো। হঠাৎ দেখি সেই কথা বলা ছেলেটা আসছে। কাছাকাছি এসে সে আমাকে বললো, তুমি তো জায়গাটা চিনতে পারবে না। এজন্য আমি এলাম, চলো তোমাকে গাড়িতে পৌঁছে দিই।
তারপর আমরা বেশ খানিকটা হেঁটে, ড্রাইভারকে কয়েকবার ফোন দিয়ে, গাড়িটা খুঁজে বের করতে পারলাম। মনে মনে ভাবছিলাম ও না এলে তো আমার আসলেই অসুবিধা হতো! এখান থেকেই উজবেকিস্তানের ভালো মানুষের গল্প শুরু, আমার ভ্রমণের শেষ দিন পর্যন্ত এই গল্প চলমান ছিলো।
এই পর্বে বেশ কিছু ঐতিহাসিক স্থান ও স্থাপনার কথা আসবে। তবে আমি ঐতিহাসিক স্থান ও স্থাপনা নিয়ে এই পর্বে তেমন একটা আলোচনা করতে চাই না। যা অন্য পর্বে আলাপ করবো। এই পর্বে আমি বেশি কথা বলবো উজবেকিস্তানের মানুষের আচরণ ও ব্যবহার নিয়ে। যা কোনো একটা দেশ ভ্রমণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
যাই হোক, আমি ট্যাক্সি নিয়ে, হোটেলে গিয়ে, বিশ্রাম নিয়ে, নাস্তা করে, হোটেলের জানালা দিয়ে প্রবল বৃষ্টি দেখে, বাধ্য হয়ে কাটিয়ে দিলাম প্রায় সারাদিন। তরপর বৃষ্টি কিছুটা কমলে বিকেলে বের হলাম একটা ঐতিহাসিক নিদর্শন কুকেলদাশ মাদ্রাসা দেখার জন্য। একটা ট্যাক্সি নিয়ে চলে গেলাম কুকেলদাশ মাদ্রাসায়। এই মাদ্রাসা ১৬ শতকে নির্মিত তাসখন্দ শহরের অন্যতম প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ মাদ্রাসা। যা বর্তমানে একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে পরিচতি ও পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় স্থান। এটি চরশুবাজার নামে একটি বিখ্যাত বাজারের কাছে অবস্থিত।

কুকেলদাশ মাদ্রাসা, তাসখন্দ
কুকেলদাশ মাদ্রাসা দেখা শেষে স্ট্রিট ফুড দেখছি আর ভাবছি এখানকার সমুচা তো খুব বিখ্যাত আর টেস্টি বলে শুনেছি, একটু চেখে দেখা দরকার। এক জায়গায় দেখি মাটির বিশাল চুলার ভেতর থেকে সমুচা বের করা হচ্ছে গরম গরম। দেখতে আমাদের সিংগাড়ার মতো কিন্তু একটা কোনা একটু বেশি লম্বা। তো নিলাম একটা সমুচা। সমুচার মধ্যে গরু বা ভেড়ার মাংস দেওয়া অনেক পরিমাণে। মানে পুরোটায় মাংস আর মশলায় পরিপূর্ণ। টেস্ট বেশ তবে ঝাল আর লবন কম। দাম দিতে যাওয়ার সময় দেখি একটি ১৮/১৯ বছরের ছেলে হঠাৎ দামটা দিয়ে দিলো। সেও আমার পাশে দাঁড়িয়ে খাচ্ছিলো। আমি তাকে সোম (উজবেজিস্তানের মুদ্রা) দিতে গেলাম কিন্তু সে নেবে না।
আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কি করো?
সে জানালো, স্টুডেন্ট।
তাহলে টাকা নেবে না কেন?
তুমি আমাদের দেশে মেহমান, আর এটা তো খুবই সামান্য অর্থ।
তুমি তো নিজে আয় করো না, তাহলে আমার বিল দিলে কেন?
এই প্রশ্নের জবাবে ছেলেটি কিছু বলেনা।
এবার আমি বললাম, আমি যাবো তোমাদের বিখ্যাত প্লভ (Plov) খেতে। ঠিকানাটা দিতে পারো?
ছেলেটি মাথা নেড়ে বললো, অবশ্যই পরি, আমি যাবো ওদিকে, চলো আমার সাথে।
আমি ছেলেটির পেছন পেছন রওয়ানা দিলাম।

মেট্রো স্টেশন, তাসখন্দ
তাসখন্দে আপনি যেখানেই যান মেট্রোর ভাড়া ২০ টাকা। কার্ড দিয়ে এক্সিট না করলে ট্রেন বদলে ভিন্ন ভিন্ন লাইনে ও ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় যেতে পারবেন, ভাড়া ওই ২০ টাকা-ই। বাস ভাড়াও কাছে দূরে শহরের যেখানেই যান ২০ টাকা। আর কি সুন্দর শীততাপ নিয়ন্ত্রিত আধুনিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন সব বাস। দেখালেই চড়তে ইচ্ছে করে। উজবেকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা কিন্তু আমাদের কাছাকাছি।
তাসখন্দের সব মেট্রো স্টেশন শীততাপ নিয়ন্ত্রিত আর কি যে সব সুন্দর ডিজাইন, বলে বোঝানো যাবে না। একেকটা স্টেশন একেক রকম সুন্দর, সব এক ডিজাইনের না। গুগল করে দেখতে পারেন।
আমরা কয়েকটা মেট্রো স্টেশন বদল করে ‘বেশ কাজন’ নামে বিখ্যাত একটা প্লভ (Plov) এর রেস্টুরেন্ট এর কাছে চলে আসি। আমাকে পৌঁছে দিয়ে ছেলেটি হঠাৎ বলে তার বাসা থেকে ফোন এসেছে তাকে ফিরতে হবে কারণ তার কাজিনের জন্মদিন। সে আর যাবে না। আমি বলি, এটা হবে না, তোমাকে আমার সাথে ডিনার করেই বাসায় যেতে হবে। কিন্তু সে কোনোভাবেই রাজি হয়না, ফিরে যায়। আমি তাকে আবার টাকা নিতে বলি কিন্তু সে রাজি হয় না। তাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ দিয়ে ‘বেশ কাজন’ রেস্টুরেন্ট এর দিকে পা বাড়াই।
উজবেজিস্তানে আমি আরও বেশ কয়েকদিন ছিলাম। এই অসম্ভব ভালো ছেলেটার সাথে আমার আর দেখা হয়নি।

প্লভ (Plov) এর রেস্টুরেন্ট ‘বেশ কাজন’
ছেলেটা চলে যাওয়ার পর ‘বেশ কাজন’ রেস্টুরেন্ট এর টেবিলে গিয়ে বাসেছি, ওয়েটার এসেছে। ওয়েটার আমাকে জিজ্ঞেস করে, ঘোড়ার মাংসের ‘প্লভ’ তোমাকে দেবো কিনা? আমি থ হয়ে কয়েক সেকেন্ড বসে থাকলাম! তারপর বললাম, না ভেড়ার বা গরুর মাংসেরটা থাকলে দিতে পারো।
Plov হল উজবেক জাতির খাবারের প্রতীক। এটা প্রত্যেক উজবেক পরিবারেই তৈরি করা হয়। উজবেক, রাশিয়ান, তাতার সব পরিবারেই। উজবেক প্লভ হল উজবেকিস্তানের মানুষের মানসিকতার অংশ। ঐতিহ্যগতভাবে প্লভ পুরুষরা রান্না করেন। বিভিন্ন উপাদানসহ উজবেক প্লভ রান্নার এক হাজারেরও বেশি রেসিপি রয়েছে এবং এমনকি রান্নার বইও রয়েছে।
উজবেকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে, উজবেক প্লভ প্রস্তুতির নিজস্ব ও ভিন্ন ভিন্ন রেসিপি রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, বুখারার লোকেরা সবুজ ছোলা দিয়ে প্লভ রান্না করে। সমরখন্দ প্লভ হালকা, ফারগানার প্লভ বাদামী। সমরখন্দে লোকেরা মাংস, গাজর, চাল স্তরে স্তরে রেখে তা সিদ্ধ করে রান্না করে। তাসখন্দের প্লভে শুরুতেই সব উপকরণ ভাজা হয়।
সাধারণত উজবেক প্লভ চাল, ভেড়া, ঘোড়া বা গরুর মাংস, হলুদ বা লাল গাজর, পেঁয়াাজ এবং উদ্ভিজ্জ তেল দিয়ে রান্না করা হয়। ঐতিহ্যগতভাবে, উজবেক প্লভ বিশাল বড় ঢালাই করা লোহার পাত্রে (কাজান) রান্না করা হয়।
পরের দিন আমি যাবো তাসখন্দ শহরে হযরতি ইমাম কমপ্লেক্স দেখতে। হযরতি ইমান কমপ্লেক্স হলো ১৬ থেকে ২০ শতকের মধ্যে নির্মিত বিভিন্ন স্থাপত্যের একটি সমাহার যার মধ্যে মুয়াই মোবারক মাদ্রাসা, কাফল শশি মাযার, বারোক্সন মাদ্রাসা উল্লেখযোগ্য। এখানে একটি কোরান যাদুঘর আছে যেখানে হযরত ওসমান (রা:) আমালের একটি প্রাচীন কোরআন সংরক্ষিত আছে, যা সপ্তম শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ের।
এই ঐতিহাসিক নিদর্শন দেখতে যাওয়ার সময়ও একজন ভালো মানুষের সাথে আমার পরিচয় হয়।
আমি যাবো এক জায়গায় আর ইয়ানডেস্কের ড্রাইভার আমাকে নামিয়ে দিয়েছে অন্য জায়গায় (উবারের মতো একটা রাইড শেয়ার এ্যাপ)। এমন হওয়ার কথা না। একবারও হয়নি এই দেশে আসার পর। কেন এমন হলো, আমি কি ভুল ঠিকানা টাইপ করেছিলাম; হয়তো তাই হবে। কারণ এখানে মানুষকে ধোঁকাবাজি করতে অন্তত আমি দেখিনি। এসব সাত-পাঁচ ভাবছি আর নিজেকে ভর্ৎসনা করছি।
যেখানে আমাকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে সেটা একটা সুন্দর জায়গা। মানুষজন এখানে বিকেলে বা সন্ধ্যায় বেড়াতে আসে। এই জায়গাটার নাম ব্রোয়াদওয়া। একটা লম্বা রাস্তা আর তার চারপাশে নানা রকম দোকান-পাট, স্যুভেনির, চিত্রকলা, নানারকম নকশাদার তৈজসপত্র, খাবারদাবার, আইসক্রিম কি নেই সেখানে।
এই সময়, আমি একজন ভদ্রলোককে দেখলাম গাড়ি থেকে নামতে। তাকে জিজ্ঞেস করলাম ‘হজরতি ইমাম কমপ্লেক্স’ কোন দিকে জনাব? আমি তো হজরতি ইমাম কমপ্লেক্স এ যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু ড্রাইভার আমাকে এখানে নামিয়ে দিয়ে গিয়েছে।
তিনি আমার কথা বুঝলেন না। তার ৭/৮ বছরের মেয়েকে বললেন আমার সাথে কথা বলতে। আমি ছোট্ট মিষ্টি মেয়েটার সাথে কথা বললাম, মেয়েটা তার বাবাকে আমার কথা বললো।
তারপর আমাকে বলা হলো, তারা ছুটির দিন ঘুরতে বের হয়েছে। আমি যদি তাদের সাথে এখানে ঘোরাঘুরির পর হজরতি ইমাম কমপ্লেক্স যেতে চাই তাহলে তারা নিয়ে যেতে পারে। আমি ভাবলাম, এটা তো খুবই ভালো সুযোগ। আপনারা ভাবতে পারেন, এমন একজন অচেনা মানুষের সাথে আমি যেতে রাজি হলাম কী করে! আসলে কয়েকদিন এখানে ঘুরে আমি বুঝে গিয়েছিলাম, এটা ভালো মানুষের দেশ। চোর, ছ্যাচ্চড়, জোচ্চর এখানে নেই।
আমি তাদের সাথে ব্রোয়াদওয়া দেখা শুরু করলাম। সুন্দর জায়গা। একজন চিত্রশিল্পী পোর্ট্রেট এঁকে দিতে চাইলো, ১০০০ টাকা, কিন্তু আমার আর পোর্ট্রেট করানো হলো না। ওয়েলকাম টু তাসখন্দ- লেখা অনেক সুভেনির দেখলাম। খুব ইচ্ছে করছিল দারুন নকশাদার এসব সুভেনির কেনার জন্য কিন্তু ব্যাগ ভারি হয়ে যাবে বলে আপাতত কেনাকাটা স্থগিত রাখলাম। ভাবলাম পরে কেনা যাবে। যদিও প্রথমবার না কিনলে সে জিনিস আর অন্য জায়গায় সচরাচর পাওয়া যায় না বা ওই জায়গায় আর দ্বিতীয় বার ফেরা হয়না।
যার সাথে ঘুরছি সেই লোকের দুই মেয়ে সাথে ছিলো। বড়টা যার বয়স ৭/৮ বছর, তার মাধ্যমেই কথা হচ্ছিল। কারণ সে ইংরেজি জানে। মেয়েটা আমার কাছে নানা কথা জানতে চাইলো, যেমন আমার ছেলে-মেয়ে কয়জন? তারা কি করে? এসব আরকি।
আমরা ঘন্টাখানেক ঘোরাঘুরি করলাম। তারপর তার ইলেকট্রিক কারে করে হজরতি ইমাম কমপ্লেক্স এ গেলাম। বিশাল কমপ্লেক্স। ইতিহাস ঐতিহ্যে ভরপুর এক জায়গা। যা সপ্তম শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে তৈরি।
ভদ্রলোকের সাথে আলাপ করে বুঝলাম তিনি আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের সাথে জড়িত। ভালো অবস্থাপন্ন বলেই মনে হলো।
লং স্টোরি শর্ট করি। তো সেই ভদ্রলোক আমাকে শহরের নানা জায়গায় ঘুরিয়ে, শহরের গুরুত্বপূর্ণ এবং দর্শনীয় সব স্থাপনাগুলো দেখিয়ে তারপর আমার হোটেলের সামনে নামিয়ে দিয়ে গেলেন। আমি তাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ দিলাম।
জানি না, আবার দেখা হবে কিনা। কিন্তু এই ভালো মানুষের দেশের এই অসম্ভব ভালো মানুষটাকে মনে থাকবে আজীবন।
আমি বোখারা থেকে সমরখন্দ ট্রেন স্টেশনে পৌঁছিয়েছি সন্ধ্যার দিকে। প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে বাইরে। আমি ঝকঝকে সমরখন্দ রেল স্টেশন দেখছি। এতো বিশাল, এতো সুন্দর ঝকঝকে, তকতকে পরিষ্কার স্টেশন আমি জীবনে কম দেখেছি। স্টেশনের মধ্যে হরেক রকমের স্টল, চা, কফি, সকমরখন্দ ব্রেড, আর গিফট শপ। কিন্তু কোথাও বিস্কিটের প্যাকেট বা বাদামের খোসা পড়ে থাকতে দেখলাম না। না কোথাও পানের পিক বা থুতুও নেই। দেওয়ালে লেখা নেই তুমি+আমি। টয়লেটগুলো এতো সুন্দর আর পরিষ্কার যে দেয়াল আর ফ্লোর দিয়ে মুখ দেখা যায়। টয়লেটে অটো এয়ার ফ্রেশনারও লাগানো আছে।
আমার হাতে ২৪ সাইজের লাগেজ আর ল্যাপটপের ব্যাগ। স্টেশনের এক্সিট হলো উপরতলায়। আমি সিঁড়ির দিকে তাকাচ্ছি আর এদিক ওদিক তাকিয়ে লিফট খুঁজছি। হঠাৎ একটা ছেলে আমাকে বললো চলো তোমার ব্যাগ উপরে দিয়ে আসি। আমি কিছু বলার আগেই দেখি আমার ব্যাগ উপরের অর্ধেক সিড়ি পর্যন্ত চলে গেছে। আমি আরে করো কি, করো কি, করতে করতে উপরের দিকে ছুটি। সে উপরে উঠে ব্যাগ আমাকে দিয়ে চলে যায়। আমাকে কিছু বলারই সুযোগ দেয় না।
বাইরে তখন বৃষ্টি হচ্ছিলো। আমার হোটেল স্টেশনের খুব কাছেই হওয়ার কথা। একটা ছেলেকে বলি আমার ফোন দেখে বলোতো হোটেলটা কোথায় হবে? সে ম্যাপ দেখে, তারপর বললো, চলো আমার সাথে, বলেই নিজের জ্যাকেটের হুডি মাথায় ওঠায়। বাইরে বৃষ্টি হচ্চিলো বলে জুতা মোজা খুলে হাতে নেয়, তারপর বলে চলো তোমাকে হোটেলে পৌঁছে দিয়ে আসি।
আমি তার পিছু পিছু যাই। এক্সিট গেটে গিয়ে দেখি, তখনো অনেক বৃষ্টি। সে বাইরে হাত দিয়ে দেখায় আর বলে ওই যে তোমার হোটেল। আমি বলি কাছেই তো। সে বলে তাহলে চলো। আমি বলি ভিজে যাবো তো। সে বলে, না অতোটা ভিজবে না, চলো। আমি বলি, হোটেল যেহেতু কাছে, তাই তুমি চলে যাও, বৃষ্টি কমলে আমি একাই যেতে পারবো।
সে রাজি হয় না, আমি তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিয়ে তারপর বিদায় জানাই। এই হলো উজবেকিস্তানের ভালো মানুষির গল্প। এতো গল্প যে বলে শেষ করা যাবে না।

রেগিস্তান স্কয়ার, সমরখন্দ
আমি যাবো সমরখন্দের রেগিস্তান স্কয়ার দেখার জন্য। ইয়ানডেক্স কল করে দাঁড়িয়ে আছি। ট্যাক্সি বেশ দেরি করছে। এখন আপনাদের খুব সংক্ষেপে রেগিস্তান স্কয়ার সম্পর্কে বলে রাখি।
রেগিস্তান স্কয়ারের ইতিহাস ৬০০ বছরের পুরাতন। ১৭ শতকের শেষের দিকে, সমরখন্দ মারাত্মক অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে গিয়েছিল। সে সময় সমরখন্দের রাজধানী শহরের মর্যাদা বুখারায় চলে যায় এবং গ্রেট সিল্ক রোডের ব্যবসায়ীরা এই শহর থেকে দূরে চলে যান। এক সময় রেগিস্তানের সুন্দর মাদ্রাসার বিস্ময়কর ভবনগুলো বন্য প্রাণীদের আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছিলো।
১৮৭৫ সালে সমরখন্দ আবারও তার পুরনো ব্যবসায়িক গৌরব পুনরুদ্ধার করে এবং রেগিস্তান স্কয়ার তার অতীতের গৌরব পুনারয় ফিরে পায়। সোভিয়েত শাসন আমলেই সমগ্র রেগিস্তানের হারানো ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার ও পুননির্মাণ করার কাজ শুরু ও শেষ হয়।
রেগিস্তান সম্পর্কে বলার আগে বলেছিলাম ট্যাক্সি কল করে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি। বার বার এ্যাপ দেখছি কিন্তু ট্যাক্সি আগাতে দেখছি না। একটা ট্যাক্সি দেখলাম দূরে দাঁড়ানো। আমি হাত ইশারা করলাম। মনে করলাম এটা বোধ হয় ইয়ানডেস্কের ট্যাক্সি। গাড়ির নাম্বার চেক করে দেখলাম এটা সেই গাড়ি না। ড্রাইভার জানতে চইলো আমি কোথায় যাবো।
আমি তাকে বললাম, ইয়ানডেক্সে ট্যাক্সি কল করেছিলাম, তুমি কি একটু তার সাথে কথা বলবে? সে কথা বলে দেখলো, ওই গাড়িতে কি যেন সমস্যা হয়েছে। ভাষা জটিলতায় আমাকে বলতে পারেনি। এই ড্রাইভার আমাকে বললো, চলো তোমাকে রেগিস্তান স্কয়ারে নামিয়ে দিই। আমি বললাম, ভাড়া কতো? সে বললো একটা কিছু দিয়ো। তারপর আমাদের অনেক কথা হলো। যেমন আমি কি করি, এখানে কেন এলাম, ছেলেমেয়েরা কোথায়। তার পরিবাররে ছবি দেখালো মোবাইল ফোনে। তারপর রেগিস্তান স্কয়ারে আমাকে নামিয়ে দিয়ে সে গাড়ি নিয়ে চলে গেল।
আরও একটা ঘটনা বলি, আমি যাবো চরশু বাজার। যাকে চরসু বাজারও বলা হয়! নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের জন্য এই বাজার খুবই বিখ্যাত! এটি তাসখন্দের পুরানো শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত। এর নীল রঙের গম্বুজ খুবই আকর্ষণীয়! এখানে আছে হাজার হাজার স্টল। কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে হাজার রকমের চকলেট, গিফ্ট শপ, ফলমূল, ভেড়া, গুরু আর ঘোড়ার মাংস, হরেক রকম সসেজ, চিজ, শাকসবজি, শত রকমের পাউরুটি, আর প্লভের রেস্টুরেন্ট।

এই দুইজনের সাথে চরশু বাজার গিয়েছিলাম যদিও আমরা দাঁড়িয়ে আছি সিটি শপিং মালের সামনে
তো চরশু বাজার যাচ্ছি, হাঁটতে হাঁটতে আবাসিক এলাকা দিয়ে। আমাকে হোটেল থেকে বলে দিয়েছে, অল্প একটু রাস্তা, হেঁটে গেলেই ভালো। সংক্ষিপ্ত রাস্তাও বাতলে দিয়েছে। তো রাস্তায় দেখা ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া দুই ছেলের সাথে। তারা জানতে চায়, আমি কোন দেশের মানুষ, কোথায় যাচ্ছি? আমি বললাম, আমি বাংলাদেশের, যাবো চরশু বাজার।
তারা বলে, বাংলাদেশ, মুসলিম, মুসলিম।
আমি বলি, হা, মুসলিম। তারা বললো, চলো আমাদের সাথে। আমি বলি, না তোমরা তোমাদের কাজে যাও, আমি গুগল ম্যাপ দেখে চলে যাবো।
তারা বলে না, তুমি মেহমান। তোমাকে এগিয়ে দিয়ে আসি। ওই দুই নাছোড়বান্দা আমাকে চোরশু বাজারের গেট পর্যন্ত পৌছে দিয়ে আসে। এখানে এমনও দেখেছি নিজের কাজ বাদ রেখে একজন টুরিস্টকে সহায়তা করতে। এই হলো উজবেকিস্তানি হসপিটালিটি।

বোখারার ড্রাই ফুডের বাজার
বোখারায় এক সকালবেলা, ইয়ানডেক্স কল করলাম। ট্যাক্সি চলে এলো আমার হোটেলে দোরগোড়ায়। ড্রাইভারকে বললাম, আমি যাবো বাহউদ্দিন নক্সবন্দির মাজারে। সে বললো চলো যাই। তারপর তার সাথে অনেক কথা হয়।
সে জানায়, সে বিবাহিত। তার বৌ থাকে রাশিয়াতে, সেখানে বিউটি পার্লারে কাজ করে।
তাহলে তুমি বউয়ের সাথে রাশিয়ায় থাকো না কেন?
ড্রাইভার জানালো, সেও রাশিয়াতে ছিল। তবে ওখানকার তীব্র শীত তার সহ্য হয় না।
তারপর?
ওখান থেকে আমি দুবাই চলে যাই। ওখানে একটা হোটেলে কাজ করতাম। দুবাইতে কাজ করে নতুন হিসবে বেশি বেতন পেতাম না। তাই আবার উজবেকিস্তানে ফিরে এসেছি। আমার বৌ পুলিশের মেয়ে। মাঝে মাঝে বেশি মেজাজ করে।
ড্রাইভারের কথায় আমি বেশ মজা পাই।
সে আরও বলে, আমি বউকে বলেছি, বেশি মেজাজ দেখালে আমি আরেকটা বিয়ে করবো। জবাবে তার বউ বলেছে, আরেকটা বিয়ে করলে, খেতে হবে জেলের ভাত। কারণ উজবেকিস্তানে বহুবিবাহ নিষিদ্ধ।
এইসব গল্পসল্প করতে করতে আমি আমার বেড়ানোর লিস্টটা তাকে দেখাই। দেখে সে বলে, আমি তোমাকে সব জায়গায় নিয়ে যাবো। আমাকে আড়াই লাখ সোম দিও।
সকাল ৮ থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ঘোরাঘুরি, তারপর আমার হোটেল থেকে লাগেজ নিয়ে রোখারা রেল স্টেশনে পৌঁছে দেওয়া। আমি এই ডিলে রাজি হয়ে যাই। কারণ প্রায় সারাদিন ১০/১২টা জায়গায় শহর ও শহরের বাইরে ঘোরার পর হোটেল থেকে লাগেজ নিয়ে স্টেশনে যাওয়া- সবমিলিয়ে সে যা চেয়েছে তা অনেক যৌক্তিক বলেই মনে হয় আমার কাছে।

মোল্লা নাসিরউদ্দিনের স্ট্যাচু
বোখারার ঐতিহাসিক জায়গাগুলো সাধারণত মানুষজন দেখা শুরু করে লাইবি হোজ বা হাউজ থেকে। এই লাইবি হোজ এলাকায় হোজ্জা নাসিরউদ্দিনের একটা স্ট্যাচু আছে। মানুষ এই স্ট্যাচুতে গিয়ে অনেকে ছবি তোলে আর তাদের ভ্রমণ শুরু করে। এই সুযোগে আমি হোজ্জা নাসির উদ্দিনের কথা আপনাদের বলে রাখি।
হোজ্জা নাসির উদ্দিন জন্মেছিলেন রোখারাতে। তিনি মোল্লা নাসিরুদ্দিন নামেও পরিচিত। তিনি একজন মধ্যযুগীয় মুসলিম সুফি যিনি হাস্যরসাত্মক চরিত্র হিসেবে সুপরিচিত। মধ্যযুগে আনুমানিক ত্রয়োদশ শতকে সেলজুক শাসনামলে ইরানের বৃহত্তর খোরাসানে তিনি বসবাস করতেন। অবশ্য নিকট ও মধ্যপ্রাচ্য এবং মধ্য এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশই নাসিরুদ্দিনকে তাদের দেশের বলে দাবী করে। এর মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান, ইরান, তুরস্ক, আজারবাইজান এবং উজবেকিস্তান। বিভিন্ন সংস্কৃতিতে তার নাম বিভিন্নভাবে উচ্চারিত হয়। তিনি জনপ্রিয় দার্শনিক এবং বিজ্ঞ ব্যক্তি ছিলেন। তার হাস্যরসাত্মক গল্প এবং উক্তিগুলোই তাকে বিখ্যাত করে রেখেছে। চীনে তিনি “আফান্টি” নামে পরিচিত এবং চীনারা তাকে উইগুরের তুর্কী ব্যক্তি বলে মনে করে।
“একদিন নাসিরউদ্দিন হোজ্জা একটি মিষ্টির দোকানের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ মিষ্টির দিকে চোখ পড়াতে তার খেতে ইচ্ছে হলেও টাকা না থাকায় শুধু মিষ্টির ঘ্রাণ নিয়ে চলে যাচ্ছিলেন। কিন্তু বাধা দিলো দোকানদার। মিষ্টির ঘ্রাণ নেওয়াতে হোজ্জার কাছে তার দাম চাইলেন তিনি। হোজ্জা পরে দিবেন বলে সেদিনের মত চলে এলেন। পরের দিন তিনি কিছু কয়েন থলেতে নিয়ে তার দোকানে গেলেন এবং ঝাঁকাতে শুরু করলেন। দোকারদার বললেন দাও আমার টাকা দাও। হোজ্জা উত্তরে বললেন টাকার ঝনঝনানি শুনতে পাচ্ছেন না? দোকারনদার বললেন হ্যাঁ শুনতে পাচ্ছি। হোজ্জা বললেন তো শোধ হয়ে গেল।
তার আর একটা মজার ঘটনা বলি, নাসিরুদ্দিন হোজ্জা একবার কী একটা কাজে পাশের গ্রামে গেলেন। কাজ শেষে ফেরার পথে এক লোক তকে জিজ্ঞাসা করল, ভাই সাহেব, আজ কী বার? হোজ্জা লোকটির দিকে তাকিয়ে বলল, ভাই, আমি এই গ্রামের লোক না। অন্য গ্রামের মানুষ। কাজেই এই গ্রামে আজ কী বার, আমার জানা নেই। জবাব দিয়ে হোজ্জা হন হন করে হেঁটে চলে গেলেন!
আমি সকাল থেকে দুপুর তিনটা পর্যন্ত লাইবিহোজ, পই-কালান কমপ্লেক্স (কালান মিনারেট, কালান মসজিদ, মির-ই-আরব মাদ্রাসা), আর্ক (একটা বিশাল দুর্গ), চার মিনার মাদ্রাসা, সামানিদ সমাধি, বোলো হোজ মসজিদ, বোখারা ট্রেডিং ডোমস্, উলুবেক মাদ্রাসা, ইসমাইল মাসানি, বোখারা বাজার, সুফি দরবেশ বাহাউদ্দিন নক্সবন্দীর সমাধি, মসজিদ এবং কমপ্লেক্স, সিতোরি মখি খোসা প্যালেস, চর বকর নেক্রোপোলিশ এসব দেখলাম। ড্রাইভার ভাই আমাকে সুন্দর পরিকল্পনা করে প্রতিটা জায়গায় নিয়ে গেলেন। আমি ভাবি, এতো ভালো সাধারণ মানুষের দেশ কীভাবেই বা গঠন করা গেল, তা এক বিষ্ময়!
ড্রাইভার ভাই হোটেল থেকে লাগেজ তুলে আমাকে বোখারা রেল স্টেশনে নামিয়ে দিয়ে গেলেন। আমি তার সহায়তা আর সুন্দর ব্যবহারের জন্য বার বার ধন্যবাদ দিলাম। তার সাথে আবার কবে দেখা হবে জানি না। তবে উজবেজিস্তানের এইসব ভাল মানুষের কথা আমার মনে থাকবে আজীবন। মানুষ এতো ভালো হয় কী করে তা দেখার জন্য আপনি যেতে পারেন এই দেশে।
তবে আমার সাথে এমন ভালো ভালো ঘটনা ঘটেছে বলে আপনার সাথেও ঘটবে এই গ্যারান্টি আমি দিতে পারি না। আর এখন প্রচুর ট্যুরিস্ট যাচ্ছে ওদেশে, তাই মানুষ বদলে যেতেও পারে। কারণ সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে এই বাঙালি প্রবাদ উজবেজিস্তানে ঘটবে কিনা আমি জানি না। সবাইকে বিশ্বাস করে ট্যাক্সিতে উঠে পড়ার পরামর্শও আমি দিচ্ছি না। আপনি সলো ট্রাভেলার হলে অবশ্যই যেখানেই যান সতর্ক থাকবেন শতভাগ। সবাই ভালো হবে, সবার আচরন-ব্যবহার একই হবে এর গ্যারান্টি নেই। কারো অভিজ্ঞতা ভিন্নও হতে পারে। আর ট্যুরিস্ট এলাকায় জিনিসপত্রের দাম এক এক দোকানে একেক রকম, তাই দেখে শুনে কিনবেন। আমি সব সময় কনভিনিয়েন্স শপে যেতাম। উজবেকিস্তানের বিখ্যাত চেইন কনভিনিয়েন্স শপের নাম korzinka যা সব বড় শহরেই দেখেছি। কারণ ওখানে দাম লেখা থাকে আর তুলনামূলক ঠিকঠাক মূল্য।
অনেক দেশে আমি দেখেছি প্রচুর বাজে ব্যবহারের মানুষ। খারাপ ব্যবহার, কথায় কথায় টিজ করে, হাসাহাসি করে। জিনিসপত্রের দাম সুযোগ পেলেই বেশি নেয়। না বুঝে উল্টাপাল্টা পরামর্শ দেয়, ট্যাক্সি ভাড়া বেশি নেয়। বিনা সার্ভিসে টিপস্ নেয়। এসব আমি উজবেকিস্তানে দেখিনি।
তবে আপনি উজবেকিস্তানে গেলে অবশ্যই সমরখন্দ, বোখারা, ফারগানা (সম্রাট বাবরের জন্মস্থান) আর খিবা ভ্রমণ করবেন। এর বাইরেও তাসখন্দ শহরেই অনেক ঐতিহাসিক স্থাপনা আছে। আছে আধুনিক সব শপিংমল আর দৃষ্টিনন্দন পার্ক, ফোয়ারা, মেট্রোরেল আর স্টেশন, আমির তিমুর স্কয়ার, মিনর মসজিদ, মিউজিয়াম অব এ্যাপলয়েড আর্টস্, স্টেট মিউজিয়াম অব টিমুরিডাস, আলিশের নভোয় থিয়েটার, আছে আধুনিক বাস আর পরিবহন ব্যবস্থা। পরের পর্বে এ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত লিখতে চাই।
রকিব রেজা: উন্নয়ন কর্মী।


























