
বিশ্বে প্রথমবারের মতো চীনের একদল গবেষক সফলভাবে মানুষের দেহে জিন-সম্পাদিত শূকরের ফুসফুস প্রতিস্থাপন করেছেন। কুয়াংচৌ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির ফার্স্ট অ্যাফিলিয়েটেড হাসপাতালের অধ্যাপক হ্য চিয়ানশিংয়ের নেতৃত্বে পরিচালিত এই গবেষণা নেচার মেডিসিন সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।
অপারেশনে একটি জিন-সম্পাদিত বামা প্রজাতির ক্ষুদ্রাকৃতির শূকরের বাম ফুসফুস মস্তিষ্ক- মৃত এক রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়, যা চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রচলিত একক ফুসফুস প্রতিস্থাপনের আদলে সম্পন্ন হয়।
গবেষক দল জানায়, দাতা-শূকরের জিনে ছয়টি পরিবর্তন আনা হয়েছিল যাতে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার কারণে অঙ্গ প্রত্যাখ্যানের ঝুঁকি কমে। প্রতিস্থাপনের পর ৯ দিন পর্যন্ত ওই ফুসফুস স্বাভাবিকভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস ও গ্যাস বিনিময় বজায় রাখতে সক্ষম হয়। এ সময় কোনো তীব্র প্রতিক্রিয়া বা সংক্রমণ দেখা যায়নি।
অধ্যাপক হ্য বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী অঙ্গ প্রতিস্থাপনের চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে। জেনোট্রান্সপ্লান্টেশন (প্রাণীর অঙ্গ মানুষের শরীরে প্রতিস্থাপন) এই সংকট সমাধানে একটি সম্ভাবনাময় পথ। এ সাফল্য ফুসফুস প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে এক ঐতিহাসিক অগ্রগতি।’
গবেষকরা আরও জানান, অঙ্গের স্থায়িত্ব বাড়ানোর জন্য জিন সম্পাদনা ও অঙ্গ প্রত্যাখ্যান প্রতিরোধে চিকিৎসা কৌশল উন্নত করার কাজ চলছে। পাশাপাশি তারা নিজেদের উদ্ভাবিত ‘টিউবলেস’ প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃত্রিম ভেন্টিলেশনের কারণে ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি কমানোর উপায়ও অনুসন্ধান করছেন।
গবেষণাটি চীনের প্রযোজ্য আইন, নীতি ও নৈতিক মানদণ্ড অনুসরণ করেই সম্পন্ন হয়েছে। মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাতের কারণে মৃত ঘোষণা করা রোগীর পরিবারের পূর্ণ সম্মতি নিয়েই ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা হয় এবং নবম দিনে পরিবারের অনুরোধে পরীক্ষা সমাপ্ত করা হয়।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জেনোট্রান্সপ্লান্টেশন গবেষণায় চীন অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। গত বছর চীনের আরেক দল গবেষক বিশ্বের প্রথম জিন-সম্পাদিত শূকরের লিভার জীবিত মানুষের শরীরে প্রতিস্থাপন করে সাড়া ফেলেছিলেন।


























