রবিবার । ডিসেম্বর ৭, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক স্বাস্থ্য ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮:২৩ অপরাহ্ন
শেয়ার

টাইফয়েড টিকার কার্যকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জেনে নিন


Typhoid-Vaccineদেশে প্রথমবারের মতো শিশুদের বিনা মূল্যে টাইফয়েডের টিকা দেওয়া হচ্ছে। এর আগে পাকিস্তান ও নেপালে এই টিকা শিশুদের দেওয়া হয়েছিল। নেপালে প্রায় ২০ হাজার শিশুর ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় টিকার কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা মূল্যায়ন করা হয়। বিশ্বখ্যাত মেডিক্যাল জার্নাল ল্যানসেট গ্লোবাল হেলথ ২০২১ সালে এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করে।

গবেষণায় দেখা যায়, ‘টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন’ (টিসিভি) প্রথম বছরে ৮১ শতাংশ এবং দ্বিতীয় বছরে ৭৯ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর। ৯ মাস বয়স থেকে ১৬ বছর বয়সী শিশুদের জন্য এই টিকা সম্পূর্ণ নিরাপদ বলে প্রমাণিত হয়। টিকা নেওয়ার পর সাধারণত সামান্য জ্বর, ইনজেকশনের জায়গায় হালকা ব্যথা বা ফোলাভাব ছাড়া বড় কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।

গবেষণায় আরও বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো—বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও নেপাল—টাইফয়েডের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। সম্প্রতি পাকিস্তানে অ্যান্টিবায়োটিক-রেজিস্ট্যান্ট টাইফয়েডের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়, যা রোগ প্রতিরোধে টিকার প্রয়োজনীয়তা আরও স্পষ্ট করে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং নেপালের পাটান অ্যাকাডেমি অব হেলথ সায়েন্সেস যৌথভাবে এই গবেষণা পরিচালনা করে। নেপালের ললিতপুর শহরে ৯ মাস থেকে ১৬ বছর বয়সী মোট ২০ হাজার ১৪ জন শিশুকে দুই দলে ভাগ করা হয়। এক দলকে ভারত বায়োটেক ইন্টারন্যাশনালের তৈরি টিসিভি টিকা এবং অন্য দলকে মেনিনজাইটিস ‘এ’ টিকা দেওয়া হয়।

প্রায় এক বছর পর্যবেক্ষণের পর দেখা যায়, টিসিভি টিকা পাওয়া শিশুদের মধ্যে মাত্র ৭ জন টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়, যেখানে মেনিনজাইটিস টিকা পাওয়া কনট্রোল গ্রুপে ৩৪ জন আক্রান্ত হয়। ফলে টিকার কার্যকারিতা হিসাব করা হয় ৭৯ শতাংশ, যা টাইফয়েডের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমায়।

টাইফয়েড টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: টিকা নেওয়ার পর কিছু হালকা ও অস্থায়ী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে, যেমন— সামান্য জ্বর (প্রায় ৯ শতাংশ ক্ষেত্রে)। ইনজেকশনের স্থানে হালকা ব্যথা, ফোলাভাব বা লালচে ভাব। তবে এসব উপসর্গ সাধারণত কোনো চিকিৎসা ছাড়াই কয়েক দিনের মধ্যেই সেরে যায়।

এই ইতিবাচক ফলাফলের ভিত্তিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) টাইফয়েড-প্রবণ দেশগুলোকে তাদের জাতীয় টিকাদান কর্মসূচিতে টিসিভি অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে।