সংবাদ সম্মেলনে প্রতিক্রিয়া জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়কে “ন্যায়বিচারের প্রতিষ্ঠা” হিসেবে আখ্যা দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রতিক্রিয়া জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চলা বিচারিক প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনেই পরিচালিত হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় “আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা এবং তার দুই সহযোগীর” বিরুদ্ধে ঘোষিত রায়কে তিনি ন্যায়বিচারের বিজয় হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারের প্রতি বিএনপি দৃঢ় অবস্থান ধরে রাখতে চায় এবং এ বিষয়ে জনগণকে সচেতন থাকার আহ্বান জানায়। পাশাপাশি অন্যান্য মামলায় অভিযুক্তদেরও ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান।
মির্জা ফখরুলের ভাষ্যে, এই রায় দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে গুম-খুন, নিখোঁজ ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে। বিশেষত ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নে নিহত সহস্রাধিক মানুষের আত্মা শান্তি পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক শুরু হয়। লন্ডন থেকে তারেক রহমান ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দিয়ে বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন। প্রায় দুই ঘণ্টার আলোচনার পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মহাসচিব।
সংবাদ সম্মেলনে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনা ও তার সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে। মামলায় রাজসাক্ষী হিসেবে থাকা সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ১৫ মাস আগে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। দেশের ইতিহাসে তিনি প্রথম সাবেক সরকারপ্রধান, যিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হলেন।
