রবিবার । ডিসেম্বর ৭, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক জাতীয় ২১ নভেম্বর ২০২৫, ৩:৪৮ অপরাহ্ন
শেয়ার

মায়ের সঙ্গে মাংস কিনতে গিয়ে আর ফেরা হলো না মেডিকেল শিক্ষার্থী রাফির


Rafiul-Rafi

স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন রাফিউল ইসলাম রাফি

রাজধানীর পুরান ঢাকার বংশালে মাংস কিনতে গিয়ে ভূমিকম্পে ছাদের রেলিং ভেঙে নিহত হয়েছেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাফিউল ইসলাম রাফি। তার বয়স ২২। আহত হয়েছেন তার মা নুসরাত বেগম, যিনি এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ভূমিকম্প শুরু হওয়ার মুহূর্তে রাফি ও তার মা বংশালের কসাইটুলীতে নয়নের মাংসের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। হঠাৎ তীব্র ঝাঁকুনির মধ্যে ভবনের ছাদের রেলিং ভেঙে নিচে পড়ে তাদের ওপর। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় দু’জনকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকরা রাফিকে মৃত ঘোষণা করেন।

হাসপাতালের মর্গের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন রাফির সহপাঠীরা। বন্ধুর মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউ। এক সহপাঠী বলেন, “রাফি খুব শান্ত ছেলে ছিল। বাজার করতে গিয়ে এভাবে চলে যাবে- ভাবতেই পারছি না।”

রাফির গ্রামের বাড়ি বগুড়া। বাবা কর্মসূত্রে দিনাজপুরে থাকেন। হলে সিট পেলেও মা ও বোনের সঙ্গে বংশালের বাসায় থাকতেন তিনি। ভূমিকম্পের খবর পেয়ে তার একমাত্র বোন দৌড়ে হাসপাতালে পৌঁছান।

মিটফোর্ড হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাজহারুল ইসলাম খান জানান, ভূমিকম্পের পর প্রায় ২০ জন আহত ব্যক্তি হাসপাতালে আসেন। তাদের মধ্যে তিনজন নিহত হয়েছেন- রাফি, আবদুর রহিম (৪৮) ও তার ছেলে মেহরাব হোসেন রিমন (১২)।

কসাইটুলীর সেই ভবনের বাসিন্দা রাওনাক জানান, “ভবনটা দুলছিল। ওপর থেকে কিছু পড়ার শব্দ শুনে নিচে নেমে দেখি, গলিতে কয়েকজন রক্তাক্ত হয়ে পড়ে আছে।”

সেদিন দোকানে মহিষের মাংস কাটার কারণে অনেকের ভিড় ছিল- ভূমিকম্পের মুহূর্তে যে ভিড়ই হয়ে ওঠে মৃত্যুফাঁদ।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির তীব্রতা ছিল ৫.৭ মাত্রা। কেন্দ্রস্থল নরসিংদীর মাধবদী। মাঝারি মাত্রার এই কম্পন ঢাকায় সৃষ্টি করেছে প্রাণহানি ও আতঙ্কের গভীর ক্ষত।