রবিবার । ডিসেম্বর ৭, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক দেশজুড়ে ২৪ অগাস্ট ২০২৫, ৮:০৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার

অনুপ্রবেশের মধ্যেই আজ শুরু রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে তিন দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন


rohinga
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা আট বছরেও নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরতে পারেনি। বরং রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সংঘাত বাড়ায় অনুপ্রবেশের প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে রাখাইন রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির হাতে, যা প্রত্যাবাসনের পথকে আরও জটিল করে তুলেছে।

এমন পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করতে আজ রোববার (২৪ আগস্ট) কক্সবাজারের ইনানীতে শুরু হচ্ছে তিন দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন। সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন কয়েক দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, জাতিসংঘের প্রতিনিধি, রোহিঙ্গাবিষয়ক দূত এবং বিদেশি কূটনীতিকরা। আগামীকাল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সম্মেলনের মূল লক্ষ্য হলো বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন করে অর্থ সংগ্রহ, তাদের মানবিক সহায়তা বাড়ানো এবং মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের কার্যকর পথ খোঁজা। সম্মেলনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ মহাসচিবের অধীনে আরও একটি বৈঠক এবং ডিসেম্বর মাসে দোহায় উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের প্রস্তুতিও চলছে।

সম্মেলনের আগেই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ফের সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত সীমান্তসংলগ্ন কুমিরখালী, শীলখালী ও সাইডং এলাকায় গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। এতে আতঙ্কে সীমান্তবর্তী এলাকার লোকজন আশ্রয় খুঁজতে পালিয়ে আসে।

টেকনাফ সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি টহল জোরদার করেছে। গত শুক্রবার একদিনেই ৬২ জন রোহিঙ্গাকে প্রবেশের চেষ্টা থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান। তার ভাষায়, “আমরা কাউকে ঢুকতে দিচ্ছি না। তবে দালাল চক্র অর্থের বিনিময়ে পারাপারের চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের ধরতে অভিযান চলছে।”

২০১৭ সালের গণহত্যার পর থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া লাখো রোহিঙ্গার কষ্ট আজও শেষ হয়নি। বর্তমানে বাংলাদেশে রোহিঙ্গার সংখ্যা ১৪ লাখের বেশি। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, শুধু ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত আরও দেড় লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে এসেছে।

ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গারা জানাচ্ছেন, রাখাইনে এখনো নির্যাতন থামেনি। আরাকান আর্মি শিশুদের জোরপূর্বক যুদ্ধে পাঠাচ্ছে, পরিবারগুলোকে মোটা অঙ্কের চাঁদা দিতে বাধ্য করছে। ফলে প্রাণ বাঁচাতে পালানো ছাড়া তাদের আর কোনো পথ খোলা নেই।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান বলেছেন, “দিন দিন প্রত্যাবাসন জটিল হচ্ছে। তবে আমরা আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছি।”