
ইসলামী ব্যাংক থেকে চাকরিচ্যুত ও ওএসডি হওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আগামী রোববার থেকে লাগাতার কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চাকরিচ্যুতদের স্বপদে পুনর্বহাল, ওএসডি প্রত্যাহার, শর্তযুক্ত মূল্যায়ন পরীক্ষা (অ্যাসেসমেন্ট টেস্ট) বন্ধ, শাস্তিমূলক বদলি (পানিশমেন্ট ট্রান্সপার) বন্ধসহ মোট ছয় দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।
চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা এমদাদ হোসাইন অভিযোগ করেন, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ প্রহসনমূলক পরীক্ষার আয়োজন করেছে। এ পরীক্ষার মাধ্যমে ৪০০ কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এবং প্রায় ৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ওএসডি করা হয়েছে। “আমাদের থাকার কথা ছিল ব্যাংকে, অথচ আজ রাজপথে সংগ্রাম করতে হচ্ছে,” বলেন তিনি।
ওএসডি হওয়া কর্মীরা জানান, সাড়ে পাঁচ হাজার পরিবারের ঘরে মানবিক বিপর্যয় চলছে। কর্মীদের অফিস আইডি ও স্যালারি আইডি বন্ধ করে দেওয়ায় তারা বেতন পাচ্ছেন না, বাজার করা বা বাসা ভাড়া দেওয়ার মতো অর্থ হাতে নেই।
ব্যাংক কর্মকর্তা হুমায়ুন মোক্তার রশীদ বলেন, “আমাদের পরিবারের সবকিছু নির্ভর করে বেতনের ওপর। অথচ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি।” আরেক কর্মকর্তা আশরাফুল হক অভিযোগ করেন, আট বছর চাকরির পর হঠাৎ করে মূল্যায়ন পরীক্ষা চাপিয়ে দিয়ে যারা অংশ নেননি, শুধু তাদেরকেই ওএসডি করা হয়েছে- এটি অবৈধ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ওএসডি কর্মকর্তাদের ওপর সম্প্রতি কয়েকটি হামলার ঘটনাও ঘটেছে। বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, রোববার থেকে কর্মবিরতি শুরু হবে এবং দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে।
এ সময় তারা রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি এবং দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানান- ব্যাংক কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে এবং একটি সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করে তাদের কর্মস্থলে ফিরিয়ে নিতে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর ব্যাপকসংখ্যক কর্মকর্তা নিয়োগ পান, যাদের অনেকেই চট্টগ্রামের পটিয়া ও আশপাশের এলাকার বাসিন্দা। গত ২৭ সেপ্টেম্বর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিশেষ দক্ষতা মূল্যায়ন পরীক্ষা আয়োজন করে। ৫ হাজার ৩৮৫ জন কর্মকর্তার অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও মাত্র ৪১৪ জন অংশ নেন। পরদিন পরীক্ষায় অংশ না নেওয়া ৪,৯৭১ জনকে ওএসডি করা হয় এবং পরীক্ষার বিরোধিতার অভিযোগে দুই দফায় প্রায় ৪০০ কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত হন।




























