
নিহত জুয়েল। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় স্ত্রীর পরকীয়ার জেরে এক প্রবাসীকে নির্মমভাবে হত্যার পর তার লাশ পুড়িয়ে ফেলার চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের স্ত্রী ঝুমা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে।
শনিবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে উপজেলার বান্দুরা ইউনিয়নের নয়ানগর এলাকায় এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। নিহত প্রবাসীর নাম মো. জুয়েল (৩৫)। তিনি নয়ানগর গ্রামের মৃত আজহার ও লায়লার ছেলে।
গ্রেপ্তার ঝুমা বেগম উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের পুরান তুইতাল গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে। প্রায় আট বছর আগে তার সঙ্গে নিহত জুয়েলের বিয়ে হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকার পর সম্প্রতি দেশে ফেরেন জুয়েল। দেশে ফেরার পর থেকেই স্ত্রী ঝুমা বেগমের সঙ্গে তার পারিবারিক কলহ চলছিল। শনিবার সন্ধ্যায় সেই বিরোধের জের ধরে ঝুমা বেগম ও অজ্ঞাত কয়েকজন সহযোগী মিলে পরিকল্পিতভাবে জুয়েলকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পরে হত্যার আলামত গোপন করতে ঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ধোঁয়া ও আগুন দেখে স্থানীয়রা চিৎকার দিলে এলাকাবাসী ছুটে আসে এবং পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ও জুয়েলের মরদেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ ঝুমা বেগমকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।
নয়নগর এলাকার বাসিন্দারা জানান, জুয়েল ছিলেন শান্ত, পরিশ্রমী ও ভদ্র স্বভাবের মানুষ। প্রবাসে কঠোর পরিশ্রমের অর্থে তিনি দেশে ফিরে নতুনভাবে সংসার গড়ার চেষ্টা করছিলেন। এমন মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে এলাকায় নেমে এসেছে শোক ও ক্ষোভের ছায়া। লাশ পুড়িয়ে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা স্থানীয়দের মধ্যে ভয় ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। তারা দ্রুত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। পরকীয়ার জেরেই প্রবাসী স্বামীকে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রী স্বীকার করেছেন।
তিনি আরও জানান, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। প্রাথমিক আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে এবং ফরেনসিক ও সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ঘটনার পূর্ণ রহস্য উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে।




























