শনিবার । ডিসেম্বর ৬, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ১০ অক্টোবর ২০২৫, ১:০৯ অপরাহ্ন
শেয়ার

মুখ দেখে পাখি চেনে এআই


 

Bird AI

প্রতি বছর শীত এলে হাজার হাজার কালোমাথা গাঙচিল সাইবেরিয়া থেকে হাজার মাইল পেরিয়ে উড়ে আসে দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের চিরবসন্তের শহর কুনমিংয়ে। এ বছর সেই পাখিদের শুধু উচ্ছ্বসিত কুনমিংবাসীই নয়—স্বাগত জানিয়েছে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা, ড্রোন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত নতুন প্রযুক্তি ‘বার্ড ফেসিয়াল রিকগনিশন’।

কুনমিংয়ের বিখ্যাত তিয়ানছি হ্রদে এখন পাখিদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছে এআই-চালিত এই সিস্টেম। এটি শুধু পাখিদের শনাক্ত করছে না, বরং তাদের আগমনের সময়, সংখ্যা, খাদ্যাভ্যাস ও বিশ্রামের ধরন সম্পর্কেও তথ্য সংগ্রহ করছে।

২০২২ সালের অক্টোবর থেকে কুনমিং তিয়ানছি মালভূমি হ্রদ গবেষণা কেন্দ্র এই প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করে। দুই বছরের ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ২০২৪ সালে পাখির প্রধান ঝাঁকের আগমন সময় আগের দুই বছরের তুলনায় প্রায় ১০ দিন দেরিতে হয়েছে।

এআই সিস্টেমে রয়েছে উচ্চ রেজল্যুশনের ক্যামেরা, ড্রোন, মাইক্রোফোন ও ডিপ নিউরাল নেটওয়ার্ক অ্যালগরিদম। এর মাধ্যমে পাখির পালক, দেহের আকার, ঠোঁটের গঠন ইত্যাদি দিয়ে তাদের আলাদা করে চেনা যায়। আগে যেখানে একই এলাকায় পাখি গণনা ও পর্যবেক্ষণে দু’জন বিশেষজ্ঞের পুরো দিন লেগে যেত, এখন এই সিস্টেম কয়েক ঘণ্টায় ৯০ শতাংশ নির্ভুলতায় একই কাজ করা যাচ্ছে।

এই সিস্টেমে ইতোমধ্যেই ১৭ প্রজাতির পাখি শনাক্ত করা হয়েছে। সেইসঙ্গে গড়ে উঠেছে লাখো ছবি, ভিডিও ও অডিওর ডাটাবেস। এমনকি নির্দিষ্ট ডাক শুনেও পাখি শনাক্ত করছে নতুন ‘অ্যাকুস্টিক রিকগনিশন’ মডিউল।

প্রকৌশলী চাং চিচং জানালেন, ‘এই প্রযুক্তি আমাদের শুধু পাখিদের অভ্যাস বোঝার সুযোগ দেয় না, বরং জলাভূমির স্বাস্থ্য ও জীববৈচিত্র্য মূল্যায়নে গুরুত্বপূর্ণ ডেটাও দিচ্ছে।’

এই প্রযুক্তির কার্যকারিতার বিস্তারিত প্রমাণ নিয়ে এ বছরের মে মাসে এনভায়রনমেন্টাল জার্নালে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।
কুনমিং ছাড়াও এখন ছোংছিংয়ের শুয়াংকুইহু ন্যাশনাল জলাভূমি পার্ক ও শানতোংয়ের ইয়েলো রিভার ডেল্টা নেচার রিজার্ভে এই এআই সিস্টেম ব্যবহার হচ্ছে, যেখানে ইতোমধ্যে ১,২০০টিরও বেশি পাখি শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ওরিয়েন্টাল হোয়াইট স্টর্ক ও হুপার সোয়ান।

সূত্র: সিএমজি