
ফাইল ছবি
টেলিযোগাযোগ খাতে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। সংস্থাটির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আমিনুল হক জানিয়েছেন, দেশে মাত্র একটি মোবাইল শনাক্তকরণ নম্বর (আইএমইআই)–এর বিপরীতে প্রায় ১০ লাখ হ্যান্ডসেট সক্রিয় রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) ঢাকায় ‘বৈধ ও নিরাপদ হ্যান্ডসেট ব্যবহারে এনইআইআরের গুরুত্ব’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এই তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, দেশের বাজারে মাত্র পাঁচটি আইএমইআই নম্বর ক্লোন করে প্রায় ৫০ লাখ ফোন ব্যবহার করা হচ্ছে, অর্থাৎ প্রতিটি নম্বর ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে ১০ লাখ করে হ্যান্ডসেট চলছে।
আমিনুল হক বলেন, আইএমইআই ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে অবৈধ হ্যান্ডসেট বাজারে আসায় কেবল আর্থিক জালিয়াতি নয়, নানা ধরনের নিরাপত্তা হুমকিও সৃষ্টি হচ্ছে। ২০১৮ সালে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) চালু না হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল রূপ নিয়েছে।
সেমিনারে ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম রিপোর্টার্স ফোরামের (টিআরএনবি) সাংগঠনিক সম্পাদক আল আমিন দেওয়ান আরও কিছু উদ্বেগজনক তথ্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, চার মোবাইল অপারেটরের নেটওয়ার্কে সচল প্রায় ১৯ লাখ ৭৬ হাজার আইফোনের মধ্যে ১৯ লাখ ৫৫ হাজারই বৈধ আমদানির তালিকায় নেই— যা প্রায় শতভাগ অবৈধ। সাম্প্রতিক হিসাবে এই সংখ্যা ২১ লাখের কাছাকাছি হতে পারে। এছাড়া দেশে সক্রিয় ২ কোটি ৩১ লাখ ২৯ হাজার স্যামসাং ফোনের মধ্যে ১ কোটি ৪৯ লাখ ২৬ হাজার ফোনই অবৈধ।
বিটিআরসির কমিশনার মাহমুদ হোসাইন এই পরিস্থিতিতে ব্যবহারকারীদের আশ্বস্ত করে বলেন, আগামী ১৬ ডিসেম্বর ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) চালু হলেও এর আগে ব্যবহৃত সব ফোন স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত থাকবে, তাই আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। একই সাথে, এনইআইআর চালুর সুযোগ নিয়ে যাতে কেউ মোবাইলের দাম বাড়াতে না পারে, সেজন্য বাজারদর পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।
সেমিনারে সিআইডি-এর অতিরিক্ত ডিআইজি জাহিদুল ইসলাম জানান, দেশে চুরি বা ছিনতাই হওয়া ফোন আখাউড়া, বটুলি, বেনাপোল ও দর্শনা সীমান্ত হয়ে ভারতে পাচার হচ্ছে। একই প্রক্রিয়ায় ভারতের চুরি হওয়া ফোনও বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। পুরোনো যন্ত্রাংশ দিয়ে তৈরি সেকেন্ডহ্যান্ড ফোনের বাজার বড় হওয়ায় চুরি হওয়া ফোন চিহ্নিত করা আরও কঠিন হচ্ছে।































