
৫১-৪৯ ভোটে প্রস্তাবটি বাতিল হয়
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভেনিজুয়েলায় সামরিক হামলার আগে কংগ্রেসের অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপের একটি প্রস্তাব নাকচ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত ভোটে দুই রিপাবলিকান সিনেটর ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে যোগ দিয়ে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলেও তা পাশের জন্য যথেষ্ট হয়নি। ৫১-৪৯ ভোটে প্রস্তাবটি বাতিল হয়।
এই ভোট এমন সময়ে হলো, যখন দক্ষিণ আমেরিকার উপকূলে যুক্তরাষ্ট্র ব্যাপক সামরিক প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং ভেনিজুয়েলা ও কলম্বিয়ার উপকূলীয় আন্তর্জাতিক জলসীমায় ধারাবাহিক বিমান হামলায় অন্তত ৬৫ জন নিহত হয়েছেন।
ওয়াশিংটন দাবি করছে, যেসব নৌযান বোমা হামলায় ধ্বংস করা হয়েছে, সেগুলো মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত হচ্ছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি। লাতিন আমেরিকার কয়েকজন নেতা, কংগ্রেস সদস্য, আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ এবং নিহতদের পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলাকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলে বর্ণনা করেছেন। তাদের দাবি, নিহতদের বেশিরভাগই ছিলেন জেলে।
এদিকে আশঙ্কা বাড়ছে যে, ট্রাম্প সরকার এই সামরিক মোতায়েনকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য হামলা চালাতে পারে। বর্তমানে ভেনিজুয়েলার আশেপাশে হাজার হাজার মার্কিন সেনা, একটি পারমাণবিক সাবমেরিন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে উন্নত এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার ইউএসএস জেরাল্ড আর. ফোর্ড-সহ একাধিক যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন রয়েছে।
ওয়াশিংটন মাদুরোর বিরুদ্ধে মাদক চোরাচালানের অভিযোগ তুলেছে, এবং ভেনিজুয়েলায় সামরিক অভিযান চালানোর ইঙ্গিত ট্রাম্প নিজেও দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবারই দুইটি মার্কিন বি-৫২ বোমারু বিমান ভেনিজুয়েলার উপকূল বরাবর ক্যারিবীয় সাগরের আকাশে টহল দেয়। ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার২৪–এর তথ্য অনুযায়ী, বিমান দুটি কারাকাসের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ঘুরে সমুদ্রের দিকে ফিরে যায়।
অক্টোবরের মধ্যভাগ থেকে এটি ছিল ভেনিজুয়েলার সীমান্তের কাছাকাছি মার্কিন সামরিক বিমানের চতুর্থবারের মতো উড্ডয়ন। এর আগে একবার বি-৫২ এবং দু’বার বি-১বি বোমারু বিমান একই এলাকায় উড্ডয়ন করে।
সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের মাত্র ১৮ শতাংশ নাগরিক ভেনিজুয়েলায় মাদুরো সরকারকে উৎখাতের লক্ষ্যে সীমিত সামরিক অভিযানকে সমর্থন করে। বিপরীতে ৭৪ শতাংশ নাগরিক মনে করেন, বিদেশে সামরিক হামলা চালানোর আগে প্রেসিডেন্টের কংগ্রেসের অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক—যা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ।
তবে রিপাবলিকান নেতারা সাম্প্রতিক সমুদ্র অভিযানে ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থানকেই সমর্থন করছেন। তারা একে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক প্রবাহ রোধের প্রচেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করছেন।
যদিও বৃহস্পতিবার মাত্র দুজন রিপাবলিকান সিনেটর—র্যান্ড পল ও লিসা মারকাউস্কি—ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে যোগ দিয়ে ট্রাম্পের এককভাবে যুদ্ধ পরিচালনার ক্ষমতা সীমিত করার পক্ষে ভোট দেন, কিছু রক্ষণশীল রাজনীতিকও ভেনিজুয়েলায় সম্ভাব্য যুদ্ধ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
আল জাজিরা অবলম্বনে





























