শনিবার । ডিসেম্বর ৬, ২০২৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ৭ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৩৪ অপরাহ্ন
শেয়ার

বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে নতুন সেনা ঘাঁটি স্থাপন ভারতের


bsf

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের আসাম রাজ্যের ধুবরি সীমান্ত শহরে নতুন একটি স্থায়ী সেনা ঘাঁটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। এটি বাংলাদেশের সীমান্তের সবচেয়ে নিকটবর্তী সামরিক স্থাপনা এবং গুয়াহাটির পর পশ্চিম আসামে প্রথম সেনা স্টেশন।

বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল আরসি তিওয়ারি ‘লাচিত বরফুকন মিলিটারি স্টেশন’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ঐতিহাসিক আহোম সেনাপতি লাচিত বরফুকনের নামে নামকরণ করা এই ঘাঁটিটি নির্মিত হচ্ছে মোগলবাহিনীর বিরুদ্ধে তাঁর বীরত্বের স্মরণে।

ধুবরির নতুন ঘাঁটিটি তেজপুরভিত্তিক চতুর্থ কোরের অধীনে থাকবে এবং বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সরকারি মালিকানাধীন বামুনি পার্ট ১ ও পার্ট ২ গ্রামের জমিতে নির্মাণকাজ চলছে; এ জন্য প্রায় ৪০টি পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে।

ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম রাওয়াত জানান, নতুন ঘাঁটিটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সেনাবাহিনীর সক্ষমতা ও অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

একটি সূত্র জানিয়েছে, ধুবরিতে স্থায়ী সেনা ঘাঁটি স্থাপনের পরিকল্পনা শুরু হয় আসাম মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার উদ্যোগে। গত জুনে ঈদের পর ওই এলাকায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ও নিরাপত্তা উদ্বেগ বাড়ায়, এরপরই প্রস্তাবটি দ্রুত বাস্তবায়ন পায়।

সূত্রটি আরও জানায়, নতুন ঘাঁটিটি সীমান্ত নজরদারি, গোয়েন্দা তৎপরতা ও সংকেত পর্যবেক্ষণের একটি কৌশলগত কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে। এতে প্রায় দেড় হাজার সেনা সদস্য অবস্থান করবেন, যার মধ্যে বিশেষ প্যারা স্পেশাল ফোর্স ইউনিটও থাকবে—যারা দ্রুত প্রতিক্রিয়া ও ট্যাকটিক্যাল অভিযানে নিয়োজিত থাকবে।

গোয়েন্দা সূত্র অনুযায়ী, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কিছু কর্মকর্তা সীমান্তবর্তী এলাকায় সফর করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, এসব সফর নতুন ভারতীয় ঘাঁটির অবস্থান ও কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে।

ভারতের সাবেক পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল রানা প্রতাপ কলিতা (অব.) বলেন, “গুয়াহাটি, রাঙ্গিয়া ও তামুলপুরের পর পশ্চিম আসামে আর কোনো স্থায়ী সেনা ঘাঁটি ছিল না। ধুবরিতে ঘাঁটি স্থাপন হলে সীমান্তে সামরিক প্রস্তুতি ও লজিস্টিক সহায়তা আরও সহজ হবে।”

বর্তমানে আসামে বাংলাদেশের সীমান্তের সবচেয়ে নিকটবর্তী ভারতীয় ঘাঁটি রয়েছে সিলচরের মাসিমপুরে, যা সীমান্ত থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে। নতুন ‘লাচিত বরফুকন মিলিটারি স্টেশন’ সীমান্তঘেঁষা অবস্থানে হওয়ায় এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে কাছের ভারতীয় সেনা স্থাপনা হতে যাচ্ছে।