রবিবার । ডিসেম্বর ৭, ২০২৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ১০ নভেম্বর ২০২৫, ৭:৫৭ পূর্বাহ্ন
শেয়ার

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র মামদানিকে ঘিরে নাগরিকত্ব বিতর্ক


Mamdani

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নিউইয়র্ক শহরের মেয়র হচ্ছেন মুসলিম ও দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত জোহরান মামদানি। তবে তাঁর এই ঐতিহাসিক জয় মেনে নিতে পারছেন না রিপাবলিকান নেতারা। তাঁরা এখন মামদানির নাগরিকত্ব নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন- এমনকি বাতিলের দাবিও উঠেছে।

উগান্ডায় জন্ম নেওয়া ৩৪ বছর বয়সী মামদানিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘কমিউনিস্ট’ আখ্যা দিয়েছেন এবং বলেছেন, তিনি মেয়র হলে নিউইয়র্কে কেন্দ্রীয় তহবিল বন্ধ করে দেওয়া হবে। ট্রাম্পের সুরে সুর মিলিয়ে রিপাবলিকান কয়েকজন আইনপ্রণেতা মামদানির নাগরিকত্বের বৈধতা তদন্তের আহ্বান জানান।

রিপাবলিকান প্রতিনিধি অ্যান্ডি ওগলেস মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেলকে চিঠি দিয়ে দাবি করেন, মামদানি নাগরিকত্বের নথিতে ‘মিথ্যা তথ্য’ দিয়েছেন। অন্যদিকে ফ্লোরিডার প্রতিনিধি রেন্ডি ফাইনও একই অভিযোগ তোলেন। যদিও কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি তাঁরা।

মামদানির জন্ম উগান্ডায়, ১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং ২০১৮ সালে নাগরিকত্ব লাভ করেন। আইনজীবীরা বলছেন, নাগরিকত্ব বাতিলের মতো কোনো আইনি ভিত্তি নেই। অভিবাসনবিশেষজ্ঞ জেরেমি ম্যাককিনলে জানান, “তিনি নাগরিকত্ব পাওয়ার শর্ত পূরণ করেছেন, মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন- এমন কোনো প্রমাণ নেই।”

রিপাবলিকানদের দাবি, ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট অব আমেরিকার সদস্য হিসেবে মামদানি কমিউনিস্ট দলের সঙ্গে যুক্ত, তাই তাঁর নাগরিকত্ব বাতিল করা উচিত। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংগঠন কোনো কমিউনিস্ট দল নয়; তাই অভিযোগের ভিত্তি নেই।

রিপাবলিকানপন্থী নিউইয়র্ক ইয়ং রিপাবলিকান ক্লাব এখন নতুন কৌশলে তাঁকে মেয়র হওয়া থেকে ঠেকাতে চাচ্ছে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনীর ব্যাখ্যা টেনে বলছে, “শত্রুদের সহায়তা করলে কেউ সরকারি দায়িত্বে থাকতে পারেন না।” কিন্তু আইনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মামদানির অবস্থান কোনোভাবেই এই ধারার আওতায় পড়ে না।

অভিবাসন আইনের বিশেষজ্ঞরা একমত- মামদানির নাগরিকত্ব বাতিলের দাবি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিকত্ব বাতিলের ঘটনা অত্যন্ত বিরল, তবে ট্রাম্প প্রশাসনের সময় এ ধরনের প্রচেষ্টা বেড়েছিল বলে উল্লেখ করেছেন হফস্ট্রা ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ইরিনা মান্ত্রা।