শনিবার । ডিসেম্বর ৬, ২০২৫
প্রবাস ডেস্ক প্রবাস ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:২১ পূর্বাহ্ন
শেয়ার

এক মাসের অপেক্ষার পর অবশেষে গ্রামে ফিরলো সবুজের লাশ


sobuj

বৃহস্পতিবার ভোরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে মরদেহ।

জীবিকার তাগিদে স্বপ্নের দুবাইয়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মো. সবুজ (৩৬)। কিন্তু প্রবাস জীবনই কেড়ে নিল তাঁর প্রাণ। নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়ে দীর্ঘ এক মাস অপেক্ষার পর অবশেষে নিথর দেহে গ্রামের বাড়িতে ফিরলেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে সবুজের লাশ অ্যাম্বুলেন্সে করে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে মুহূর্তেই কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। তার অকাল মৃত্যুতে ছোট দুর্গাপুর গ্রামে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।

নিহত সবুজ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ছোট দুর্গাপুর মিয়াজি বাড়ির মৃত আছামত উল্লাহর ছেলে। বৃহস্পতিবার বাদ জোহর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। শেষবারের মতো সবুজকে দেখতে গ্রামের শত শত মানুষ ছুটে আসেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ২২ আগস্ট রাত ৯টার দিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের আজমান কেরামা এলাকায় এক ওমানি প্রবাসীর হাতে খুন হন সবুজ। ঘটনার দিন সবুজ তার ভাড়া বাসায় থাকা ওই ওমানি ব্যক্তির কাছে বকেয়া ভাড়া চাইতে গেলে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি সবুজের মাথায় ভারি বস্তু দিয়ে আঘাত করলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।


sobujদুবাইয়ে এক মাস ধরে মর্গে সবুজের লাশ, অপেক্ষায় পরিবার

 


হত্যার ঘটনার পর কাগজপত্র ও আইনি প্রক্রিয়ার জটিলতায় সবুজের মরদেহ প্রায় এক মাস ধরে বিদেশের মাটিতে পড়ে ছিল। সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে বৃহস্পতিবার ভোরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে দেশে আসে তার মরদেহ।

পরিশ্রমী ও প্রাণবন্ত সবুজকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ তাঁর পরিবার। সবুজের মা পারুল বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার ছেলেটা কষ্ট করে সংসার চালাতে বিদেশে গিয়েছিল। জানতাম একদিন স্বপ্ন পূরণ করে ফিরবে, কিন্তু আজ সে লাশ হয়ে ফিরল। আমি এখন কার দিকে তাকাবো?’

নিহতের স্ত্রী রীমা আক্তার আহাজারি করে জানান, ‘আমার ১০ বছরের ছেলে বায়েজিদ বাবার জন্য কাঁদছে। শিশুটি এখন বাবা হারা হয়ে গেল। আমাদের জীবনে অন্ধকার নেমে এল।’

গ্রামের মানুষ জানান, সবুজ ছিলেন পরিশ্রমী ও দয়ালু তরুণ। তার অকাল মৃত্যু পরিবার ও সমাজের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। নিথর দেহটি যখন পারিবারিক কবরস্থানে শেষ বিশ্রামের জন্য শায়িত করা হয়, তখন যেন নিঃশব্দ শোকের ছায়া নেমে আসে পুরো গ্রামে।