
নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে অবশেষে খরা কাটল ভারতের। ২০০৫ ও ২০১৭ সালের ফাইনালের সেই আক্ষেপ ভুলে রোববার নাভি মুম্বাইয়ের ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে প্রথমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের ট্রফি উঁচিয়ে ধরল হারমনপ্রীত কৌরের দল। রুদ্ধশ্বাস এই লড়াইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫২ রানে হারিয়ে শিরোপা জয়ের উৎসব করে ভারতীয়রা।
২৯৯ রানের টার্গেটে দুর্দান্ত শুরু করে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। অধিনায়ক লরা উলভার্টের ঝলমলে সেঞ্চুরি (১০১) ম্যাচে উত্তেজনা তুঙ্গে পৌঁছে দেয়। কিন্তু ৪২তম ওভারে দীপ্তি শর্মার বলে আমানজোত কৌরের নেওয়া এক অবিশ্বাস্য ক্যাচে উলভার্ট ফিরে গেলেই হঠাৎই ভেঙে পড়ে প্রোটিয়াদের প্রতিরোধ। ২৪৬ রানে অলআউট হয়ে বড় মঞ্চে আবারও স্বপ্নভঙ্গের বেদনা নিয়ে মাঠ ছাড়ে দলটি।
ইতিহাস গড়া ভারতের জয়ে সবচেয়ে বড় নায়িকা স্পিনার দীপ্তি শর্মা। বল হাতে একাই শিকার করেন ৫টি উইকেট। তাকে সঙ্গ দেন শেফালি ভার্মা, যিনি নেন আরও দুটি উইকেট।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ভারত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৯৮ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ গড়ে। ভেজা আউটফিল্ডে ভারতকে চাপে ফেলতে চেয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক উলভার্ট। কিন্তু তার পরিকল্পনায় পানি ঢেলে দেন দুই ওপেনার স্মৃতি মান্ধানা ও শেফালি ভার্মা। উদ্বোধনী জুটিতে ১৭.৩ ওভারে ১০৪ রান তুলে দৃঢ় ভিত গড়ে দেন তারা। মান্ধানা ৪৫ রানে ফিরলেও শেফালি খেলেন ৮৭ রানের বিধ্বংসী ইনিংস, মারেন ৭ চার ও ২ ছক্কা।
জেমিমাহ রদ্রিগেজের ২৪ রানের ইনিংসেও দল এগিয়ে যেতে থাকে। তবে মাঝপথে হারমনপ্রীত কৌর (২০) ও আমানজোত কৌর (১২) দ্রুত ফিরলে চাপ বাড়ে ভারতের ওপর। সেই চাপ সামাল দিয়ে শেষদিকে রিচা ঘোষ ও দীপ্তি শর্মার তাণ্ডবে আবারও গতি ফিরে পায় স্কোরবোর্ড। দুজন মিলে ৩৫ বলে ৪৭ রান জুড়ে দেন। রিচা ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৩৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন। আর দীপ্তি করেন ৫৮ রান, শেষ বলে রানআউটের আগে ৩ চার ও ১ ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে নিয়ে যান তিনশোর দুয়ারে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল আয়াবোঙ্গা খাকা। ৯ ওভারে ৫৮ রান দিয়ে শিকার করেন ৩ উইকেট।
দুই দশকের লম্বা অপেক্ষা শেষে ভারতীয় নারী ক্রিকেটের মাথায় আজ অলংকৃত হলো বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের সোনালি মুকুট। দেশের কোটি ক্রিকেটভক্তের স্বপ্নও এদিন পূরণ হল ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামের সবুজ গালিচায়।




























