
বাড়িতে ফিরোজের, নিথর দেহ পৌঁছানোর পর শুরু হয় কান্নার রোল। ছবি: সংগৃহীত
জীবিকার তাগিদে স্বপ্ন নিয়ে তিন মাস আগে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন রাজবাড়ীর ফিরোজ তরফদার (৩০)। কিন্তু সেই স্বপ্নভূমি থেকেই ফিরলেন কফিনবন্দী হয়ে। বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মৃত্যুর ২০ দিন পর শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সকালে তাঁর মরদেহ ফিরে এসেছে আপন ঠিকানায়—রাজবাড়ী সদর উপজেলার পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের জগতপুর গ্রামে।
সকাল সাড়ে ৭টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লাশবাহী গাড়ি পৌঁছায় ফিরোজের বাড়িতে। মুহূর্তেই কান্নায় ভেঙে পড়ে পুরো এলাকা। মা পিয়ারা বেগমের বুকফাটা আহাজারি, স্ত্রী জুথি আক্তারের কান্না—সব মিলিয়ে শোকের ছায়ায় ঢেকে যায় জগতপুর গ্রাম। জুমার নামাজের পর জানাজা শেষে ফিরোজকে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।
গত ১৮ অক্টোবর স্থানীয় সময় বিকেল ৪টার দিকে সৌদি আরবের তাবুক প্রদেশের আল-ওয়াজ শহরে ওয়াশরুমে গিজার মেশিন স্থাপনের সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান ফিরোজ।
ফিরোজের ছোট ভাই মিরাজ তরফদার জানান, “ভাই মাত্র তিন মাস আগে—গত ১ আগস্ট—সৌদি আরবে যায়। আল-ওয়াজ শহরে স্যানিটারি মিস্ত্রির কাজ করত। আমরা ভাবিনি, এমনভাবে ফিরবে।”
মাত্র তিন বছর বয়সী জুনায়েদ ইসলাম জিসান নামের একটি শিশু এখন পিতৃহীন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সানাউল্লাহ মিজি বলেন, “ফিরোজ খুবই ভালো ছেলে ছিল। পরিবারের দায়িত্ব নিতে গিয়েছিল বিদেশে। কিন্তু নিয়তি তাঁকে ফিরিয়ে আনল লাশ হয়ে। পুরো এলাকায় এখন শোকের মাতম।”
প্রবাসে প্রতিদিন এমন অসংখ্য ফিরোজ হারিয়ে যাচ্ছে নিঃশব্দে—যাদের স্বপ্ন শুরু হয় জীবনের লড়াই থেকে, কিন্তু শেষ হয় নিঃসঙ্গ কফিনে।




























