রবিবার । ডিসেম্বর ৭, ২০২৫
স্পোর্টস ডেস্ক খেলা ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ১০:০২ অপরাহ্ন
শেয়ার

এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাই

ভারতকে হারিয়ে ২২ বছরের আক্ষেপ ঘোচালো বাংলাদেশ


mursalin

ভারতের বিপক্ষে গোল করার পর মোরছালিন

এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের শেষ ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে ২২ বছরের আক্ষেপ ঘোচালো বাংলাদেশ। খেলার ১২তম মিনিটে শেখ মোরসালিনের করা একমাত্র গোলই লাল-সবুজদের জয় নিশ্চিত করে।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) রাতে ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ ম্যাচে বাংলাদেশ ১-০ গোলে পরাজিত করে প্রতিবেশী প্রতিপক্ষকে। মোরসালিনের সেই নির্ণায়ক গোলের নেপথ্যে ছিল রাকিব হোসেনের দারুণ পাস। তবে পুরো ম্যাচে সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলেন হামজা চৌধুরী। রক্ষণভাগে গুরুত্বপূর্ণ ক্লিয়ারেন্স থেকে শুরু করে মাঝমাঠে নিয়ন্ত্রণ—প্রতি মুহূর্তেই তিনি ছিলেন দলের ভরসা। বলা যায়, তার দাপুটে পারফরম্যান্সই বাংলাদেশের জয়ের ভিত্তি গড়ে দেয়।

২০০৩ সালের ১৮ জানুয়ারি ঢাকাতেই ভারতকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। মতিউর রহমান মুন্নার গোল্ডেন গোলে সেদিন সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছিল লাল-সবুজরা। দীর্ঘ ২২ বছর পর আবারও ভারতের বিরুদ্ধে জয়ের স্বাদ পেল দলটি।

চোটের কারণে নেপাল ম্যাচে অনুপস্থিত থাকা মোরসালিন ফিরেই এনে দেন স্বস্তির গোল। জাতীয় স্টেডিয়ামের ২৩ হাজার ৭১২ দর্শককে আনন্দে ভাসান তিনি। বাঁ দিক থেকে রাকিব হোসেনের গতিময় ক্রসটি গুরপ্রীত সিং সান্ধুর দু’পায়ের ফাঁক দিয়ে আলতো টোকার মাধ্যমে জালে পাঠান মোরসালিন—যা তার জাতীয় দলের সপ্তম গোল।

গোলের পর আরও কয়েকটি আক্রমণ সাজালেও সেগুলো গোলমুখে বিপজ্জনক হতে পারেনি। বিপরীতে ম্যাচের ৩১ মিনিটে বড় ভুল করে বসেছিলেন গোলরক্ষক মিতুল মারমা। বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে প্রতিপক্ষের পায়ে তুলে দেন তিনি। ভারতীয় খেলোয়াড়ের শট গোলমুখে যাচ্ছিল, কিন্তু দুর্দান্তভাবে হেড করে তা ঠেকান হামজা।

৪২তম মিনিটে দ্বিতীয় গোল পেতে পারত বাংলাদেশ। বক্সের বাইরে থেকে নেয়া হামজার ভলিটি অল্পের জন্য বাইরে দিয়ে যায়। রক্ষণভাগ থেকে আক্রমণ—সব জায়গায়ই উজ্জ্বল উপস্থিতি ছিল লেস্টার সিটির এই মিডফিল্ডারের। পরে আর কোনো গোল না হওয়ায় ১-০ ব্যবধানে বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা।

দ্বিতীয়ার্ধে সমতায় ফিরতে ভারত শুরুতেই আক্রমণের চাপ বাড়ায়। প্রথম পাঁচ মিনিটে দুইবার গোলের সুযোগ পেলেও দু’বারই বল পোস্টের পাশ দিয়ে বাইরে যায়। ৭০ মিনিটে মোহাম্মেদ সানানের জোরালো শটটি দারুণ সেভ করেন মিতুল।

৮২তম মিনিটে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা পেনাল্টির দাবি তুললেও রেফারি তা নাকচ করে দেন। এর আগে ৭৮ মিনিটে তপু বর্মণের দূর্বল শট সহজেই ধরেন ভারতীয় গোলরক্ষক। যোগ করা সময়েও একবার বিপদমুক্ত করেন মিতুল, যদিও শেষ মুহূর্তে আবারও ভুল করতে বসেছিলেন তিনি—তবে দ্বিতীয় চেষ্টায় বল ধরে পরিস্থিতি সামলে নেন।

শেষ সময়ে পাল্টা আক্রমণে দ্বিতীয় গোলের সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ, কিন্তু সেটি কাজে লাগাতে পারেনি। তবুও শেষ বাঁশিতে বহু প্রতীক্ষিত জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে লাল-সবুজরা—এবং ২২ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে বড় সাফল্যের স্বাদ পায়।