রবিবার । ডিসেম্বর ৭, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক রাজনীতি ৭ নভেম্বর ২০২৫, ৭:০২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস আজ


zia

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস আজ

আজ ৭ নভেম্বর—বাংলাদেশের ইতিহাসে এক স্মরণীয় দিন, জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। পঞ্চাশ বছর আগে এই দিনে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ও সাধারণ মানুষের ঐক্যবদ্ধ বিপ্লবের মধ্য দিয়ে অরাজকতা ও অনিশ্চয়তার অবসান ঘটিয়ে দেশ নতুন পথে যাত্রা শুরু করেছিল।

১৯৭৫ সালের এই দিনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। সেদিনের স্বতঃস্ফূর্ত গণঅভ্যুত্থান ও সংহতির সেই মুহূর্তে জাতি নতুন আশার আলো খুঁজে পায়। আর এর মধ্য দিয়েই রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।

সেই ঐতিহাসিক দিনে জাতি আবারও শুনেছিল তাঁর কণ্ঠ—“আমি জিয়া বলছি।” যে কণ্ঠে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সূচনায় স্বাধীনতার ঘোষণা এসেছিল, সেই কণ্ঠেই আবারও শুনেছিল আশ্বাস ও প্রেরণার বার্তা। মুহূর্তেই জেগে উঠেছিল মুক্তির স্পৃহা, স্বাধীনতার চেতনা। রাজধানীসহ সারাদেশের রাস্তায় মুখর হয়ে উঠেছিল স্লোগানে— “সিপাহী–জনতা ভাই ভাই, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান জিন্দাবাদ, সিপাহী–জনতা এক হও।”

ইতিহাসের এই দিনটি বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি বড় মোড় পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস নামে পরিচিতি পায়। এই বিপ্লবের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশ অরাজকতা ও ষড়যন্ত্রের অন্ধকার থেকে মুক্ত হয়ে নতুন সূচনায় পা রাখে। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর তৎকালীন সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান জাতিকে ভূরাজনৈতিক ও সম্প্রসারণবাদী ষড়যন্ত্রের জাল থেকে মুক্ত করেন।

সেই সময় দেশপ্রেমিক সৈনিক ও সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারীদের পরাস্ত করে জিয়াউর রহমানকে নেতৃত্বে আনেন। ৭ নভেম্বরের এই বিপ্লবের পর থেকেই বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, আত্মমর্যাদা ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্যের বিকাশ শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে নানা ষড়যন্ত্রে তাঁর নাম মুছে ফেলার চেষ্টা হলেও, সাধারণ মানুষের হৃদয়ে তিনি স্থায়ী হয়ে আছেন।

দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দিবসটি উপলক্ষে শুক্রবার সকাল ৬টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল ১০টায় দলের শীর্ষ নেতারা মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন।

এদিন দুপুর ৩টায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে র‌্যালি বের হবে। সারাদেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে।

দিবসটি উপলক্ষে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নানা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—

৫ নভেম্বর শ্রমিক দলের আলোচনা সভা, ৭ ও ৮ নভেম্বর ছাত্রদলের আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা, ৯ নভেম্বর ওলামা দলের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, ১০ নভেম্বর তাঁতী দলের আলোচনা সভা, ১১ নভেম্বর কৃষক দলের আলোচনা সভা, এবং ১৩ নভেম্বর জাসাসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

এছাড়া বিএনপির উদ্যোগে ১২ নভেম্বর চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। ৬ থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত দিবসটি ঘিরে ডকুমেন্টারি, স্থিরচিত্র ও ভিডিও প্রকাশ করা হবে ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট এবং অনলাইন মাধ্যমে। এছাড়া পোস্টার ও বিশেষ ক্রোড়পত্রও প্রকাশ করা হবে।

৭ নভেম্বরের এই দিনটি কেবল একটি রাজনৈতিক ঘটনার স্মৃতি নয়, বরং স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে জাতির আত্মমর্যাদা ও ঐক্যের প্রতীক হিসেবেই চিরস্মরণীয় হয়ে আছে।