
বলিউডের অন্যতম কিংবদন্তি অভিনেত্রী রেখা তার চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেছিলেন তেলুগু সিনেমায় শিশুশিল্পী হিসেবে। তার বাবা-মা ছিলেন প্রখ্যাত অভিনেতা জেমিনি গণেশন ও পুষ্পাবল্লী, অর্থাৎ শিল্পী পরিবারে তাঁর জন্ম। তবে হিন্দি সিনেমায় প্রবেশের পর রেখা তীব্র সমালোচনার মুখোমুখি হন। তার গাঢ় রঙের ত্বক (ডার্ক স্কিন), খাটো দেহভঙ্গি ও অনন্য স্টাইল প্রায়ই উপহাসের লক্ষ্য ছিল।
সমালোচকরা এবং ইন্ডাস্ট্রির অভ্যন্তরীণ মহল তার অভিনয় ক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেন, কেউ কেউ তাকে ‘ডল-লাইক হিরোইন’ বলতেন, অর্থাৎ শুধু সাজসজ্জার চরিত্রের জন্যই উপযুক্ত। এসব সমালোচনা রেখার আত্মবিশ্বাসকে কমিয়ে দেয় এবং প্রায়ই তিনি সন্দেহ করতেন যে তিনি হিন্দি সিনেমার প্রতিযোগিতাপূর্ণ জগতে টিকে থাকতে পারবেন কি না, বিশেষ করে হেমা মালিনীর মতো সহকর্মীদের সঙ্গে তুলনা করলে।

১৯৭০- এর দশকের শেষ দিকে নিজের ক্ষমতা প্রমাণ করার সংকল্পে রেখা জীবন ও ক্যারিয়ার উভয়কেই নতুনভাবে সাজান। তিনি যোগব্যায়াম গ্রহণ করেন, ওজন কমান, এবং চেহারা ও স্টাইল পুনরায় আবিষ্কার করেন। পাশাপাশি তিনি আরও সাবধানভাবে চরিত্র নির্বাচন করতে শুরু করেন, এমন চরিত্র বেছে নেন যা তার প্রতিভা ফুটিয়ে তুলতে পারে।
তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মোড় আসে ১৯৭৮ সালের ‘ঘর’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে, যেখানে তিনি ধর্ষণের শিকার চরিত্রে অভিনয় করেন। শক্তিশালী পারফরম্যান্স সমালোচকদের নীরব করে দেয় এবং তাকে একজন গম্ভীর অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। ‘মুকদ্দার কা সিকন্দর’ এর মতো চলচ্চিত্রে অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে তার অনস্ক্রিন জুটি আইকনিক হয়ে ওঠে।
‘উমরাও জ়ান’ এ নর্তকী চরিত্রে অভিনয় রেখার জন্য দর্শক ও সমালোচকদের মনে অমর প্রভাব ফেলে। তিনি ‘উৎসব’, ‘কালযুগ’, ‘সিলসিলা’ এবং ‘খুবসুরত’ চলচ্চিত্রে কৌতুক এবং নাটক দুটিতেই সমান দক্ষতা প্রদর্শন করেন।

উপহাসকে অতিক্রম করে স্টাইল আইকনে পরিণত হওয়া রেখার যাত্রা ধৈর্য, নিষ্ঠা এবং শিল্পের প্রতি অনন্য প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। আজ তাকে শুধুমাত্র তার সৌন্দর্যের জন্য নয়, বরং তার অসাধারণ প্রতিভা এবং ভারতীয় চলচ্চিত্রে স্থায়ী প্রভাবের জন্য স্মরণ করা হয়।
আজ ‘চিরসবুজ’ অভিনেত্রী রেখার জন্মদিন। আজ শুক্রবার, ১০ অক্টোবর, ৭১ বছর পূর্ণ করলেন তিনি।
সূত্র: ডিএনএ



























